ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ডায়ালাইসিস করতে আসা দুই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ ইউনিটটি বন্ধ ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
একই সঙ্গে এই ইউনিটের সব চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর ফলে এ ইউনিটের ১০ জন চিকিৎসক, ৯ জন নার্স ও ৪ জন ওয়ার্ড বয় মিলিয়ে মোট ২৩ জন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উত্তর পাশে নতুন ভবনের পঞ্চম তলায় কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিটটি অবস্থিত। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে এটি একমাত্র সরকারি ডায়ালাইসিস কেন্দ্র। ডায়ালাইসিস ইউনিট সূত্রে জানা যায়, ওয়ার্ডটিতে প্রতিদিন দুই পালায় ১৪ জন করে ২৮ জন রোগীর ডায়ালাইসিস করা হতো। বর্তমানে ওয়ার্ডটির সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
ডায়ালাইসিস ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক আশুতোষ সাহা রায় জানান, গত সোমবার (১৩ এপ্রিল) দুই ব্যক্তি ডায়ালাইসিস করতে হাসপাতালে আসেন। তাঁদের একজনের বাড়ি টাঙ্গাইল, অন্যজনের জামালপুরে। ডায়ালাইসিস শেষে ওই দিনই করোনা পরীক্ষার জন্য তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে তাঁদের নমুনায় করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। যেহেতু দুজন ব্যক্তির সংস্পর্শে কাজ করেছেন এই বিভাগের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা, তাই এই খবর পাওয়ার পর থেকে বর্তমানে ডায়ালাইসিস ওয়ার্ডসংশ্লিষ্ট সবাই হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ডায়ালাইসিস ইউনিটের সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুক জানান, ‘এ খবর জানার পর থেকেই আমাদের সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পরিবারের সদস্যরাও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। সতর্কতার জন্য সবাই এখন হোম কোয়ারেন্টিনে আছি।’
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লক্ষ্মী নারায়ণ মজুমদার জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শনিবার বৈঠক ডাকা হয়েছে। ইউনিটটি কীভাবে চালু রাখা যায়, তা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আক্রান্ত রোগীদের সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিএমএ ময়মনসিংহ শাখার সভাপতি মতিউর রহমান ভূঁইয়া জানান, ইউনিটটি বন্ধ থাকায় কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত রোগীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। বিকল্প ব্যবস্থায় ইউনিটটি দ্রুত কীভাবে চালু করা যায়, সে বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে চিকিৎসকদের সুরক্ষার দাবিও জানান এই চিকিৎসক।