করোনায় মারা গেলেন চিত্রশিল্পী মাহমুদুল হক

চিত্রশিল্পী মাহমুদুল হক  
ছবি সংগৃহীত

করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিরবিদায় নিলেন দেশের বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী মাহমুদুল হক। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে এক ছেলে ও দেশ বিদেশে অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

মাহমুদুল হকের ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক প্রথম আলোকে জানান, অসুস্থ হওয়ার পরে তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত শুক্রবার থেকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের রামপালে তাঁকে দাফন করা হবে। তবে সময়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

মাহমুদুল হকের জন্ম ১৯৪৫ সালে রামপালের শ্রীফলতলা গ্রামে। তিনি ১৯৪৮ সালে তৎকালীন সরকারি চারু ও কারুকলা কলেজ (এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) থেকে বিএফএ এবং পরে জাপানের সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয় এমএফএ ডিগ্রি লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি ছাপচিত্রের ওপরে জাপান থেকে দুই বছরের উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

মাহমুদুল হক ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ২০১০ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ছাপচিত্র বিভাগের প্রধান, চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে এবং পরে জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

দেশে বিদেশে শিল্পী মাহমুদুল হকের শিল্পকর্মের ৩৯টি একক এবং অনেক যৌথ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি ২০১৯ সালে জাপানের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার অর্ডার অব দ্য রাইজিং সান লাভ করেন। এ ছাড়া জাপানের সুচিউরা সিটি শ্রেষ্ঠ চিত্রকলা পুরস্কার, ১৯৯২ সালে ১০ম জাতীয় শিল্পকলা প্রদর্শনীতে 'বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার', ১৯৯৩, ১৯৯৫ ও ১৯৯৭ সালে টানা তিনবার এশীয় দ্বিবার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনীতে সম্মানসূচক পুরস্কার, কুয়েত আন্তর্জাতিক দ্বিবার্ষিক প্রদর্শনীতে দ্বিতীয় পুরস্কার, এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের 'সুলতান পদক'সহ দেশে বিদেশে অনেক পদক ও পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

দেশে জাতীয় চিত্রশালা, জাতীয় জাদুঘরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগ্রাহক এবং বিদেশের অনেক চিত্রশালায় তাঁর শিল্পকর্ম সংগৃহীত হয়েছে।