করোনাকালে অনেক মন্দের মধ্যেও ভালো খবর

প্রতীকী ছবি
ছবি: অগাস্ট ডি রিচেলিউ, পেকজেলসডটকম

করোনা মহামারির সময় ভালো খবর খুব কম ছিল। তবে গবেষকেরা বলছেন, একটি ভালো খবর অনেকের দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। তাঁরা বলছেন, করোনাকালে শিশুদের প্রতি শারীরিক নির্যাতন কম হতে দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশু নির্যাতন কমার বিষয়টি আপাত স্ববিরোধী মনে হলেও সত্যবর্জিত নয়। তাঁরা বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সমাজসেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালে শিশু নির্যাতনবিষয়ক প্রতিবেদন কম হয়েছে। হাসপাতালে শিশু ভর্তির পরিমাণও বাড়েনি। আঘাত নিয়ে জরুরি বিভাগে শিশুদের আসার হারও ছিল কম।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের শিশুস্বাস্থ্য সাময়িকী ‘জামাপেডিয়াট্রিক্সে’ ছাপা হয়েছে গবেষণাসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় শিশু কল্যাণ বিভাগ নিয়মিতভাবে শিশুদের ওপর নির্যাতনের তথ্য রাখে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, মহামারির সময় শিশুর প্রতি নির্যাতন ৭০ শতাংশ কমতে দেখা যায়।

সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, নির্যাতনের শিকার হয়ে জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসা শিশুর সংখ্যা করোনার সময় কমতে দেখা গেছে।

ইনস্টিটিউট অব ফ্যামিলি স্টাডিজের জাতীয় জরিপেও শিশুদের ওপর নির্যাতন কমার বিষয়টি উঠে এসেছে। জরিপে অংশ নেওয়া ৮৫ শতাংশ মা-বাবা বলেন, তাঁরা গত এক সপ্তাহে শিশুদের শারীরিক শাস্তি দেননি। এই ফলাফল অন্য প্রতিবেদনের পাওয়া তথ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ছিল।

গবেষকেরা বলছেন, মহামারির সময় বিপর্যস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা করার নানা উদ্যোগ ছিল। এসব উদ্যোগের ইতিবাচক প্রভাবের কারণে শিশু নির্যাতন কমে ছিল।

গবেষকেরা বলেছেন, করোনা মহামারির সময় অভূতপূর্ব কিছু ঘটনা ঘটেছে। এগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিল চাপে থাকা পরিবারের জন্য সরকারি সহায়তা, মা-বাবা বাড়িতে বেশি সময় দেওয়ার কারণে শিশুদের সাহচর্য বেড়ে যাওয়া, বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করায় বাবা-মায়ের সম্পর্কের গভীরতা বৃদ্ধি ও ইতিবাচক অভিভাবকত্বের বিষয়গুলো।

অনেক পেশাজীবী করোনার সময় শিশু নির্যাতন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন। তাঁরা গবেষকদের কাছে শিশুদের সঙ্গে সময় কাটানোর আবেগঘন বর্ণনা দিয়েছেন। পেশাজীবীরা বলেছেন, একটা জটিল সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁদের। এ সময় শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই গবেষণার উল্লেখ করলে একজন জ্যেষ্ঠ নারী সাংবাদিক প্রথম আলোকে বলেন, করোনা বিধিনিষেধের সময় ছিল তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। মহামারিকালে তিনি তাঁর দুই মেয়েকে বেশি সময় দিতে পেরেছেন। এমন সুযোগ তিনি তাঁর কর্মজীবনে আর কখনো পাননি।