অল্পবয়সী মেয়েটির বাস রাজধানীর শনির আখড়া এলাকায়। স্বামী ফুটপাতে জুতার ব্যবসা করেন। একমাত্র ছেলেটি নিতান্তই শিশু। গর্ভে আবার সন্তান এলে স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি গর্ভপাত করানোর সিদ্ধান্ত নেন।
প্রতিবেশী এক ভাবির পরামর্শে পাড়ার ওষুধের দোকান থেকে বড়ি কিনে খান। তারপর মেয়েটির রক্তপাত আর বন্ধ হয় না। পেটে তীব্র ব্যথা।
সরকারের মাতুয়াইল পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রের পরিবারকল্যাণ সহকারী পাপিয়া খন্দকার এই অবস্থায় মেয়েটিকে নিয়ে যান বেসরকারি মেরী স্টোপস ক্লিনিকে। সেখানে গত ৩১ জানুয়ারি চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার (ডিঅ্যান্ডসি) করে মেয়েটির জরায়ু থেকে ভ্রূণের অবশেষ বের করে আনেন। মেয়েটি এযাত্রায় বেঁচে যান।
পাপিয়া খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, মেয়েটি সাইটোমিস নামের যে ওষুধ খেয়েছিলেন, তার শ্রেণিগত (জেনেরিক) নাম মিসোপ্রোস্টল। ওষুধটি তিনি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বিনা ব্যবস্থাপত্রে কিনেছিলেন। ঠিক সময়ে সঠিক মাত্রায় খাননি। আধখেঁচড়া গর্ভপাত হয়ে ভেতরে ভ্রূণ থেকে গিয়েছিল। প্রচুর রক্ত গেছে।
পাপিয়া খন্দকার শনির আখড়া এলাকায় পরিবার পরিকল্পনা সেবা দিচ্ছেন প্রায় ১০ বছর। তিনি বলেন, এলাকার প্রায় সব ওষুধের দোকানে মিসোপ্রোস্টল পাওয়া যায়। ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই মানুষ হরহামেশা এই ওষুধ কিনছে, ভুলভাবে ব্যবহার করছে।
সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সর্বশেষ তালিকা বলছে, দেশে ২১টি কোম্পানি মিসোপ্রোস্টল বানায়। বাজারে চলে—এমন কতগুলো ব্র্যান্ড হচ্ছে মিসোটল, সাইটোমিস, আইসোভেন্ট, মিসোপা ও জি-মিসোপ্রোস্টল। প্রসব এবং মাসিক নিয়মিতকরণের জন্য (এমআর) ওষুধটির ব্যবহার বৈধ। তবে তা উপযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ওষুধবিজ্ঞানের অধ্যাপক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এই ওষুধে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, জীবনেরও ঝুঁকি আছে। তাই ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এই ওষুধ বিক্রি করা উচিত নয়।
ঝুঁকির নাম মাতৃমৃত্যু
নারী সংগঠন নারীপক্ষ ২০১৮ সালে গর্ভপাত নিয়ে একটি গবেষণা করেছে। সেখানে উদ্ধৃত ২০১৪ সালের একটি হিসাবে দেখা যায়, সে বছর আড়াই লাখের বেশি নারীর গর্ভপাতজনিত চিকিৎসা লেগেছে। এদের প্রায় অর্ধেকের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছিল। আর সেটার কারণ ছিল মিসোপ্রোস্টলের ভুল ব্যবহার। সর্বশেষ মাতৃমৃত্যু জরিপ বলছে, দেশে গর্ভপাতজনিত মৃত্যুর হার বেড়েছে। ২০১৪ সালে মোট মাতৃমৃত্যুর ১ শতাংশ ছিল গর্ভপাতজনিত কারণে। এখন হারটি ৭ শতাংশ।
গত ২৭ জুন ঢাকায় এনজিও পপুলেশন কাউন্সিলের একটি অনুষ্ঠানে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য কর্মসূচি) মোহাম্মদ শরীফ বলেছিলেন, ফার্মেসিগুলোতে হরহামেশা এমআরের ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। এর কারণে অনেক মাতৃমৃত্যু হচ্ছে।
মিসোপ্রোস্টল জরায়ু সংকুচিত করে। বিএসএমএমইউর স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, সে কারণে এই ওষুধ প্রসববেদনা তুলতে সাহায্য করে। আবার নির্দিষ্ট মাত্রায় এ ওষুধ প্রয়োগ করলে জরায়ু বেশি সংকুচিত হয়ে প্রসব–পরবর্তী রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়। তাঁরা দুটি কাজেই এই ওষুধ ব্যবহার করছেন।
মিসোপ্রোস্টল একসময় অম্বল বা অ্যাসিডিটির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হতো। ২০১৩ সালে সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর প্রসবসংক্রান্ত ব্যবহারের উপযুক্ত মাত্রায় মিসোপ্রোস্টল বড়ি উৎপাদনের অনুমোদন করেছে। মাসিক নিয়মিতকরণ তথা এমআর বা মিনস্ট্রুয়াল রেগুলেশনের (প্রারম্ভিক গর্ভপাতসহ) জন্যও ওষুধটির ব্যবহার অনুমোদিত হয়েছে। আগে গর্ভপাতের উপযোগী মিসোপ্রোস্টল অবৈধভাবে ভারত ও পাকিস্তান থেকে আসত। দেশে উৎপাদনের পর এর ব্যবহার ব্যাপক হয়।
ডা. রেজাউল বলেন, শহরের গলিতে, বস্তিতে বা গ্রামের ওষুধের দোকানে মিসোপ্রোস্টল মুড়িমুড়কির মতো বিক্রি হচ্ছে। নারীরা কিনছেন, খাচ্ছেন আর বিপদে পড়ছেন। তিনি বলেন, অসম্পূর্ণ গর্ভপাত বা গর্ভপাতজনিত জটিলতা নিয়ে নিয়মিত বিএসএমএমইউতে রোগী আসছে। ব্যক্তিগত চেম্বারেও নিয়মিত রোগী পান।
>মিসোপ্রোস্টলের ভুল ব্যবহারে মৃত্যু হতে পারে
নজরদারি আর পরিবার পরিকল্পনাসেবার অভাবে ঝুঁকি বাড়ছে
এই প্রতিবেদক সম্প্রতি শাহবাগ থেকে সাইটোমিস নামের মিসোপ্রোস্টল কিনেছেন। দোকানি চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র দেখতে চাননি। মোড়কে থাকা ব্যবহারবিধিতে বলা হয়েছে, প্রসবের সূচনাকল্পে এবং প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণ বন্ধে এটা ব্যবহার করা যাবে। তবে গর্ভাবস্থায় মিসোপ্রোস্টল ব্যবহারযোগ্য নয়।
ওষুধ দোকানিদের সংগঠন বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির মহাসচিব বিন আলী প্রথম আলোকে বলেছেন, মিসোপ্রোস্টল বিক্রির কড়াকড়ির কোনো বিধিনিষেধ তাঁরা পাননি। ওষুধ বিক্রিতে অনিয়মের নজরদারি করা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একটি কাজ।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) রুহুল আমিন বলেন, ওষুধটির ক্ষতিকর প্রভাব বা অপব্যবহার নিয়ে পেশাজীবী চিকিৎসকদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ বা তথ্য পেলে অধিদপ্তর ব্যবস্থা নেবে, যেমন নিয়েছে অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে।
গর্ভপাত ও এমআর
১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি (ধারা ৯১) অনুযায়ী কেবল মায়ের জীবন বাঁচানোর প্রয়োজন ছাড়া বাংলাদেশে গর্ভপাত অবৈধ। অন্যদিকে দেশে মাসিক নিয়মিতকরণ বৈধ। এমআর জরায়ু পরিষ্কার করে। এভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত ভ্রূণও বেরিয়ে যেতে পারে। জাতীয় পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচিতে ১৯৭৯ সাল থেকে এমআর অন্তর্ভুক্ত আছে।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রেজাউল করিম বলেন, গর্ভধারণসহ নানা কারণে নারীর মাসিক বন্ধ হতে পারে। মাসিক নিয়মিতকরণের জন্য গর্ভ নষ্ট করলে তা আসলে গর্ভপাতই।
প্রজনন বয়সী কোনো নারীর মাসিক বন্ধ হওয়ার ৬ সপ্তাহ পর থেকে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত তিনি আইনত এমআর করাতে পারেন। আগে যন্ত্র দিয়ে জরায়ু পরিষ্কার করে এমআর করা হতো। ২০১৩ সাল থেকে ওষুধও ব্যবহৃত হচ্ছে।
গর্ভপাত অবৈধ। সুতরাং সরকার গর্ভপাতের কোনো পদ্ধতি বা নির্দেশনা দেয় না। এমআরের সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি সম্পর্কে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর পরিপত্র জারি করেছে। পরিপত্র অনুযায়ী, প্রশিক্ষিত চিকিৎসক এমআর করাবেন। তবে ১০ সপ্তাহের মধ্যে হলে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীও এমআর করাতে পারবেন।
ওষুধ দিয়ে এমআর করাতে হলে সেটা করাতে হবে ৯ সপ্তাহের মধ্যে। ওষুধ বলতে পর্যায়ক্রমে মিফেপ্রিস্টন ও মিসোপ্রোস্টল—এই দুই ধরনের বড়ি কীভাবে ও কোন মাত্রায় সেবন করতে হবে, পরিপত্রে তা বর্ণনা করা আছে। এমএম কিট নামের দুই ওষুধের একটি প্যাকেট আছে। সরকার এটা বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে কেনে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, গর্ভে সন্তানের অবস্থান ও বয়স আলট্রাসনোগ্রাফের মাধ্যমে জানার পর তাঁরা ওষুধ খাওয়ার ব্যবস্থাপত্র দেন। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য কর্মসূচি) মোহাম্মদ শরীফ প্রথম আলোকে বলেন, দেশে এখন বছরে প্রায় ১০ লাখ এমএম কিটের চাহিদা আছে। অথচ সরকার পাঁচ বছরের জন্য মাত্র ৫০ হাজার ৫০০ কিট কিনেছে।
খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলায় কর্মরত একজন পরিবারকল্যাণ সহকারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমএম কিটের চাহিদা প্রচুর। আমরা দিতে পারি না। মানুষ ওষুধের দোকান থেকে কিনে নেয়।’ সরাসরি দোকানির কাছে গেলে দোকানি আন্দাজে ওষুধ দেন।
এমএম কিটের কারবার
সরকারি কর্মসূচিতে এমএম কিটের ব্যবহার শুরু হয় ২০১৩ সালে। এই কিট ওষুধের দোকানেও পাওয়া যায়। এর প্যাকেটে লেখা থাকে ‘কেবলমাত্র রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী বিতরণ ও সেবনযোগ্য’। এটা মোটেই মানা হচ্ছে না।
রাজধানীর শাহবাগে বেশ কয়েকটি দোকানে এমএম কিট বিক্রি হয়। কোম্পানিভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দাম। আবার মিসোপ্রোস্টল আলাদাও বিক্রি হয়। এ প্রতিবেদককে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার কয়েকজন দোকানি বলেছেন, এসব ওষুধ গর্ভপাতে লাগে। নারীপক্ষের গবেষণাটিতে ৫৫৩ জন দোকানির সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল। দেখা যায়, ৬৪ শতাংশ দোকানি ওষুধের মাত্রা সম্পর্কে কিছু জানেন না।
একটি যৌথ জরিপ বলছে, ২০১০ সালের তুলনায় ২০১৪ সালে দেশে এমআর কমেছে ৩৪ শতাংশ। জরিপটি করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের গুট্মকার ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশে সংক্রমণজনিত গর্ভপাত (সেপটিক অ্যাবরশন) প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে কর্মরত বেসরকারি সংগঠন বাপসা।
জরিপ অনুযায়ী, ২০১৪ সালে মোট গর্ভধারণের প্রায় অর্ধেক ছিল অনিচ্ছাকৃত। সংখ্যায় ২৮ লাখ। এঁদের প্রায় ৬০ শতাংশ নারী এমআর ও গর্ভপাত করান। এঁদের মধ্যে প্রায় ১২ লাখ নারী স্বেচ্ছায় গর্ভপাত করিয়েছেন। গর্ভপাত প্রায়ই অনিরাপদ পরিবেশে অদক্ষ কর্মীর হাতে হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
বিপদ নারীরই
সরকারি হিসাব বলছে, ১২ শতাংশ সক্ষম দম্পতি প্রয়োজনের সময় কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী পান না। অর্থাৎ তাঁদের কাছে সরকারি পরিবার পরিকল্পনা সেবা পৌঁছায় না। স্ত্রীরা অনিচ্ছায় গর্ভধারণের শিকার হন।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ নাঈমা কবির দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তিন দশক ধরে বেসরকারি ক্লিনিক পরিচালনা করছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গর্ভপাতের জটিলতা নিয়ে প্রতি মাসে পাঁচ–সাতজন নারী আসেন। খুঁটিয়ে প্রশ্ন করলে তাঁরা বলেন, বাচ্চা নষ্ট করতে গিয়ে ওষুধ খেয়েছিলেন।
নাঈমা কবির বলেন, রোগীদের এক থেকে আড়াই মাস রক্ত ঝরার ইতিহাস পাওয়া যায়। আলট্রাসনোগ্রাম করলে দেখা যায়, ভ্রুণের কিছু অংশ জরায়ুতে রয়ে গেছে। রক্ত জোগাড় করতে হয়, ডিঅ্যান্ডসি করতে হয়। রোগীর আট–নয় হাজার টাকা খরচ হয়। কষ্ট তো হয়ই।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ডিএমসিএইচ) পরিচালকের দপ্তরের দেওয়া তথ্য বলছে, এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগে ৮৯৯ জন রোগী এসেছিলেন গর্ভপাতজনিত জটিলতা নিয়ে। তবে জটিলতার কারণ মিসোপ্রোস্টল কি না, সে তথ্য নেই। বিভাগের একজন সহকারী রেজিস্ট্রার চিকিৎসক আইরিন বিনতে সাত্তারের ধারণা, শতকরা ছয় থেকে আটজন আসেন ওষুধ খেয়ে বিপদে পড়ে। এঁদের একটি অংশ কিশোরী।
এই চিকিৎসকেরা প্রথম আলোকে বলেছেন, ঠিক মাত্রায় নিয়ম মেনে ওষুধ না খেলে ভ্রূণের কিছু অংশ জরায়ুতে থেকে যায়। ফলে হঠাৎ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে অনিয়মিতভাবে দুই-আড়াই মাস ধরে চলতে পারে। কয়েকবার এমন হলে গর্ভধারণক্ষমতা পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ আইরিন বিনতে সাত্তার বলেন, অনেক সময় ভ্রূণ জরায়ুতে না থেকে গর্ভনালিতে থাকে। মা যদি প্রস্রাব পরীক্ষা করিয়ে গর্ভপাতের জন্য দোকান থেকে কিনে ওষুধ খান, তাতে কাজ হবে না। ভ্রূণ বড় হতে থাকবে। গর্ভনালি ফেটে মৃত্যুও হতে পারে।
অধ্যাপক ফিরোজা বেগম স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সাবেক মহাসচিব। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সংগঠনের আসন্ন বার্ষিক সম্মেলনে মিসোপ্রোস্টলের যথেচ্ছ ব্যবহারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে জানানো হবে।
গুট্মকার ইনস্টিটিউট ও বাপসার জরিপটি বলেছিল, নারীদের এমআর সেবা এবং নিরাপদ সময়সীমা সম্পর্কে সচেতন করা দরকার। এ ছাড়া দোকানমালিকদের মিসোপ্রোস্টল এবং এর সহগামী মিফেপ্রিস্টনের ব্যবহারবিধি আর ঝুঁকি সম্পর্কে জানাতে হবে। অপব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে ক্রেতাদের সতর্ক করতে প্রচার-প্রচারণা লাগবে। দোকানগুলোতে পোস্টার ও লিফলেট থাকতে হবে।
ডিএমসিএইচের আইরিন বিনতে সাত্তার বলছিলেন, অল্পবয়সী অনেক ভুক্তভোগী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারই করেন না। তাঁরা গর্ভধারণের পর এমআর অথবা গর্ভপাত করান। এমএম কিট বা মিসোপ্রোস্টল সেবনকেই তাঁরা জন্মনিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি হিসেবে নেন।
আইরিনের সুপারিশ, পরিবার পরিকল্পনা সেবাকে সহজলভ্য করতে হবে। অন্যদিকে, সরকারি কর্মসূচিতে এমএম কিট কেনা বাড়াতে হবে। চাহিদার অনুপাতে এখন তা খুবই কম।