ঐতিহাসিক নিদর্শন অটুট রেখেই উত্তরা গণভবনের উন্নয়ন

উত্তরা গণভবনের প্রধান ফটক। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
উত্তরা গণভবনের প্রধান ফটক। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি তথা উত্তরা গণভবনের মূল স্থাপত্যশৈলী ঠিক রেখেই উন্নয়ন প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে রাজবাড়ির ভেতরের অবকাঠামো অক্ষুণ্ন রেখে এর বাইরের পরিত্যক্ত জায়গায় আধুনিক মোটেল, স্মরণিকা শপ, সিনেপ্লেক্স, থ্রিডি মুভি কর্নার, ফুড কোর্ট ও চিলড্রেনস কর্নার নির্মাণ করা হবে। এটি বাস্তবায়নে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে।

আজ শনিবার দুপুরে নাটোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে উত্তরা গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটি ও স্থানীয় সাংবাদিকদের এক মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ এসব তথ্য জানান। সম্প্রতি উত্তরা গণভবনের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ায় এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজ্জাকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, রাজধানীর বাইরে নাটোরে একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন উত্তরা গণভবন রয়েছে। এ ছাড়া এটি দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি হওয়ায় এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও মর্যাদা রয়েছে। যার কারণে উন্নয়ন করতে গিয়ে রাজবাড়ির ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং গণভবনের মর্যাদা যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে। তবে প্রস্তাবটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, অথচ উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে মনগড়া তথ্য প্রকাশ করে কিছু গণমাধ্যম অপপ্রচার চালাচ্ছে। এতে এই এলাকার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

উত্তরা গণভবন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

জেলা প্রশাসক বলেন, উত্তরা গণভবনের ভেতরের সব কটি স্থাপনা অটুট রাখা হবে। শুধু পর্যটকদের সুবিধার্থে ও সার্বিক নিরাপত্তা বজায় রাখার স্বার্থে ওয়াকওয়ে, সিটিং প্লেস, ওয়াচ টাওয়ার, ফোয়ারা, ঝুলন্ত সেতু, ভাসমান মঞ্চসহ অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন প্রকল্প ধারণা তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত নেওয়া হবে।

সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে মূল ফটকের বাইরে মোটেল, সিনেপ্লেক্স, ফুড কর্নার, সুইমিংপুলসহ ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে জমা দিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে।

মতবিনিময় সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাজেদুর রহমান খান, নাটোর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বানু, জজকোর্টের সরকারি কৌঁসুলি সিরাজুল ইসলাম, আইনজীবী খগেন্দ্রনাথ রায়, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোস্তাক আলী, লেখক খালিদ বিন জালাল বাচ্চুসহ জেলার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে উত্তরা গণভবন সংস্কারের আগের এবং পরের সম্ভাব্য উন্নয়ন নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন উত্তরা গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসচিব এবং এনডিসি অনিন্দ মণ্ডল।