এবার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা পঙ্কজ নাথকেও সরানো হলো

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির পর এবার সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ নাথকেও পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে সাংগঠনিক কার্যক্রম এবং আগামী সম্মেলনের প্রস্তুতির কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একাধিক সদস্য বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ সিদ্ধান্ত এসেছে বলে জানান তাঁরা।

এর আগে গত বুধবার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় মোল্লা মো. আবু কাওছারকে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর আলোচনায় ছিলেন তিনি। তাঁর ও পরিবারের সদস্যদেরও ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়।

 আগামী ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এর তিন সপ্তাহ আগে মোল্লা মো. আবু কাওছার ও পঙ্কজ নাথকে সরিয়ে দেওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক এক নেতাকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে ওই নেতার নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার বিষয়ে পঙ্কজ নাথ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে মূল দলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কিছু জানানো হয়নি।’

স্বেচ্ছাসেবক লীগের জন্ম ১৯৯৪ সালে। এরপর আহ্বায়ক কমিটি পার করে দেয় ৯ বছর। ২০০৩ সালে প্রথম কমিটি হয় সংগঠনটির। এর ৯ বছর পর ২০১২ সালে হয় দ্বিতীয় কমিটি। ৭ বছর পর এখন হতে যাচ্ছে তৃতীয় সম্মেলন। গঠনতন্ত্র অনুসারে তিন বছর পরপর সম্মেলন করার কথা থাকলেও গত ২৫ বছরে হয়েছে মাত্র দুটি।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন আসার আগে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাঁর ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া সরকারের অনুমতি ছাড়া তাঁর বিদেশযাত্রার ক্ষেত্রে ৬ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞা দেয় অভিবাসন পুলিশ। 

পঙ্কজ নাথ মেহেন্দীগঞ্জ-হিজলা (বরিশাল–৪) আসনের বর্তমান সাংসদ। গত বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও তাঁর নির্বাচনী এলাকার আওয়ামী লীগের একাংশ সংবাদ সম্মেলন করে পঙ্কজ নাথের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং ক্যাডার দিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করেছিল। তাঁর বিরুদ্ধে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ-হিজলা এলাকায় স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মনসুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, পঙ্কজ নাথ বিদ্রোহী প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়। 

তবে এলাকায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের তিনি সমর্থন দেননি বলে গত সপ্তাহে প্রথম আলোকে বলেছিলেন পঙ্কজ নাথ। স্থানীয় রাজনীতির ষড়যন্ত্রের শিকার বলেও তখন তিনি দাবি করেছিলেন।

আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর ২০০৯ সালে ঢাকায় পরিবহন ব্যবসা শুরু করেন পঙ্কজ নাথ। ‘বিহঙ্গ’ নামে পরিচালিত তাঁর পরিবহন একটি রুট নিয়ে শুরু করে ব্যবসা। গত বছর পর্যন্ত পাঁচটি রুটে ২৪০টি বাস চলছে তাঁর কোম্পানির। নব্বইয়ের দশকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।