যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (ইউএস–এফডিএ) অনুমোদন পেয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। গত মঙ্গলবার এসকেএফের গাজীপুরের টঙ্গীতে ফারাজ আয়াজ ভবনের সলিড ম্যানুফ্যাকচারিং ফ্যাসিলিটি এ গুরুত্বপূর্ণ অনুমোদন পেয়েছে।
খাদ্য ও ওষুধের মাননিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এফডিএ খুব কড়াকড়ি নিয়মনীতি ও পদ্ধতি অনুসরণ করে। সাধারণত এফডিএর অনুমোদন পাওয়া ওষুধের মান ও কার্যকারিতা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ থাকে না। বিশ্বের সব বড় ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি এ অনুমোদনের চেষ্টা করে। এ অনুমোদন পেলে বিশ্বব্যাপী ওষুধ বাজারজাত করা সহজ হয়।
করোনা মহামারিকালে এসকেএফ বিশ্বে প্রথম জেনেরিক ওষুধ রেমডেসিভির ও মলনুপিরাভির বাজারে এনেছিল। করোনা চিকিৎসার ওষুধও তারা বাজারে এনেছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩২ বছর ধরে ওষুধ উৎপাদন করছে। বর্তমানে বিশ্বের ছয়টি মহাদেশের ৬৭টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করে এসকেএফ।
এফডিএর পর্যালোচনা ও অনুমোদনের জন্য এসকেএফের পক্ষ থেকে ‘প্রেগাবালিন ক্যাপসুল’–এর আটটি বিভিন্ন মাত্রার (২৫, ৫০, ৭৫, ১০০, ১৫০, ২০০, ২২৫ ও ৩০০ মিলিগ্রাম) এব্রিভিয়েটেড নিউ ড্রাগ অ্যাপ্লিকেশন (এএনডিএ) জমা দেওয়া হয়। প্রেগাবালিন মৃগীরোগ প্রতিরোধী একটি ওষুধ। ওষুধটি নিউরোপ্যাথি ও অন্যান্য স্নায়ু সম্পর্কিত ব্যথা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়। এফডিএর অনুমোদন পাওয়ার ফলে এসকেএফ প্রেগাবালিনসহ অন্যান্য ওষুধ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি করতে পারবে। গতকাল এসকেএফ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তারা অল্প সময়ের মধ্যে ওষুধটি যুক্তরাষ্ট্রে বাজারজাত করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউএস–এফডিএ ওষুধের মানের নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিশ্বের এক নম্বর সংস্থা। এর অনুমোদন পাওয়া গৌরবের বিষয়। এফডিএর অনুমোদন পেয়ে এসকেএফ দেশের ওষুধশিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্থাপন করল।’ এর আগে ইউএস–এফডিএর অনুমোদন পেয়েছিল স্কয়ার ও বেক্সিমকো।
এর আগেও এসকেএফ বিশ্বের নামকরা আরও কয়েকটি ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেয়েছিল। এর মধ্যে আছে যুক্তরাজ্যের এমএইচআরএ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিএমপি, যুক্তরাজ্যের ভিএমডি, ব্রাজিলের এনভিসা এবং অস্ট্রেলিয়ার টিজিএ। এফডিএর অনুমোদন মানসম্পন্ন ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে এসকেএফের আরও একটি বড় স্বীকৃতি।
এফডিএর অনুমোদন পাওয়ার পর ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (গ্রুপ সিইও) এবং এসকেএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সিমিন রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মাননিয়ন্ত্রণে অবিচল থেকে মানবতার সেবায় এসকেএফ সব সময় অগ্রদূতের ভূমিকায় থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএর কাছ থেকে স্বীকৃতি বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্বের কাছে আমাদের ওষুধের গুণগত মানকে আরও সুদৃঢ় করেছে।’
সিমিন রহমান আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তটি অত্যন্ত গৌরবের। এফডিএর অনুমোদন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমাদের লক্ষ্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে উৎপাদিত নতুন ওষুধের মাধ্যমে রোগীর অপূরণীয় চাহিদা মেটানো এবং আমি বিশ্বাস করি, এ ক্ষেত্রে এসকেএফের দক্ষ কর্মীরা অন্যদের থেকে আমাদের আলাদা অবস্থান তৈরি করবে।’
ইউএস–এফডিএ ওষুধের মানের নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিশ্বের এক নম্বর সংস্থা। এর অনুমোদন পাওয়া গৌরবের বিষয়।সীতেশ চন্দ্র বাছার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন
করোনা মহামারিকালে এসকেএফ বিশ্বে প্রথম জেনেরিক ওষুধ রেমডেসিভির ও মলনুপিরাভির বাজারে এনেছিল। করোনা চিকিৎসার ওষুধও তারা বাজারে এনেছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩২ বছর ধরে ওষুধ উৎপাদন করছে। বর্তমানে বিশ্বের ছয়টি মহাদেশের ৬৭টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করে এসকেএফ। এসকেএফ ট্রান্সকম গ্রুপের একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান। ট্রান্সকমের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত লতিফুর রহমান। তিনি বিশ্বে নৈতিকতা ও সৎ ব্যবসায়ী হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।