জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগের সিনিয়র সচিবকে আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব শফিউল আজিম। তাতে ২০২৩ সালের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন বাতিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধও জানানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার এই আধা সরকারি পত্র দেওয়া হয় বলে ইসি সূত্র জানিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিগত সরকার সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনসংক্রান্ত কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। নির্বাচন কমিশনের মতামত গ্রহণ না করেই ‘রুলস অব বিজনেস’ পরিবর্তন করা হয়।
শুরু থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা দিয়ে আসছে নির্বাচন কমিশন। সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার এ কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এ জন্য গত বছর জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনে সংশোধনীও আনা হয়। তবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তারা শুরু থেকে সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ছিলেন। আইন সংশোধন হলেও এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনই এনআইডি সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
এনআইডি কার্যক্রমের ইতিহাস তুলে ধরে ইসি সচিবের আধা সরকারি পত্রে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন ১৭ বছর ধরে নিবন্ধিত নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিচ্ছে। এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশব্যাপী নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব অবকাঠামো এবং প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল তৈরি হয়েছে।
পত্রে আরও বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের একই জনবল ও অর্থে এক দিকে ভোটার তালিকা তৈরি এবং উপজাত হিসেবে নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি হচ্ছে। এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হলে তথ্যের অমিলের কারণে ভোট প্রদান বাধাগ্রস্ত হবে এবং নির্বাচন পরিচালনায় বিঘ্ন ঘটবে। এ ছাড়া তথ্যভান্ডারের শুদ্ধতা বিনষ্ট হওয়ার শঙ্কা তৈরির পাশাপাশি নাগরিকদের তথ্যের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে।