একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর হওয়া বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ফিরে এসেছেন। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ভোরে কে বা কারা তাঁকে ধানমন্ডিতে বাসার কাছে রেখে যায়। তবে কারা হুম্মামকে রেখে গেছে, এত দিন তিনি কোথায় ছিলেন, তা হুম্মাম জানেন না।
সাত মাস আগে গত বছরের ৪ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনের রাস্তা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয় দিয়ে কয়েক ব্যক্তি হুম্মামকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান বলে তখন তাঁর আইনজীবী ও পরিবার অভিযোগ করেছিল। এরপর থেকে তিনি ‘নিখোঁজ’ ছিলেন।
এদিকে হুম্মাম কাদের ফিরে আসার পর একইভাবে একই মাসে নিখোঁজ হওয়া বাকি দুজনকে অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়ার বা গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গত বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সংস্থা দুটি।
এই দুজন হলেন একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া (পরে মারা গেছেন) জামায়াতের নেতা গোলাম আযমের ছেলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল্লাহিল আমান আযমি এবং ফাঁসি কার্যকর হওয়া মীর কাসেম আলীর ছেলে মীর আহমেদ বিন কাসেম।
এইচআরডব্লিউ ও অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে বলা হয়, গত বছরের ৯ আগস্ট মধ্যরাতে বাড়ি থকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে সাদাপোশাকের একদল লোক মীর আহমেদ বিন কাসেমকে তুলে নিয়ে যান। এরপর ২২ আগস্ট সন্ধ্যায় সাদাপোশাকের একদল লোক গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যান আব্দুল্লাহিল আমান আযমিকে।
অবশ্য বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো এই তিনজনকে আটক করার কথা অস্বীকার করে আসছে।
হুম্মামের ফিরে আসার বিষয়ে তাঁর চাচা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভোরে কে বা কারা হুম্মামকে ধানমন্ডি লেকপাড়ের মসজিদের সামনে রেখে যায়। তিনি বলেন, হুম্মাম এত দিন কোথায় ছিলেন, কে বা কারা তাঁকে নামিয়ে দিয়ে গেছে, এ বিষয়ে হুম্মাম কিছু জানেন না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির পর তাঁর ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে।