ঢাকা মহানগরে গণপরিবহনগুলোতে শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া কার্যকরের প্রথম দিন আজ। কিন্তু পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। শিক্ষার্থীদের কটূক্তি করতেও দেখা গেছে। পরিবহনমালিকেরা কি তাহলে অর্ধেক ভাড়া মানছেন না? এ নিয়ে কথা হয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহর সঙ্গে।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মো. আব্দুল্লাহ আল হোসাইন।
গণপরিবহনে আজ অনেক শিক্ষার্থীকে ইউনিফর্ম, আইডি কার্ডসহ দেখা গেছে। তারপরও বাসচালকের সহকারীরা অনেকে অর্ধেক ভাড়া রাখেননি।
খন্দকার এনায়েত উল্যাহ: গত পরশু মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বলেছি, বিষয়টি শ্রমিকদের জানিয়ে দিতে। অনেকেই জানাননি এখনো সম্ভবত। তবে এটা (অর্ধেক ভাড়া) পুরোপুরি কার্যকর হয়ে যাবে। এখন যেটা হচ্ছে, তা জানাজানির অভাব। অনেক শ্রমিক আবার ইচ্ছাকৃতভাবেও করছে। আমরা এটা তদারকি করব। এখন চট্টগ্রামে অর্ধেক ভাড়া নিয়ে ব্যস্ত আছি। এটা শেষ হলে বাকি বিষয়গুলোতে নজর দেব।
অনেকেই ভাড়া কম রাখছেন। কিন্তু অর্ধেক না। যেমন নির্ধারিত ২০ টাকার পরিবর্তে রাখা হচ্ছে ১৫ টাকা। অর্ধেক ভাড়ার কি ভিন্ন অর্থ দাঁড়াচ্ছে?
খন্দকার এনায়েত উল্যাহ: সম্প্রতি আমাদের ৯টি দল কাজ করছিল এসব দেখাশোনা করতে। যদিও বিভিন্ন কাজের কারণে দলগুলো এখন মাঠে নাই। চট্টগ্রামের সিদ্ধান্তের পর আমরা মাঠে নামব আবার।
পরিবহনমালিকেরা শর্ত দিয়েছেন, শুধু ঢাকা মহানগরে চলাচলকারী বাসে অর্ধেক ভাড়া দেওয়া যাবে। আজ দেখা গেল, ঢাকা কমার্স কলেজের একজন শিক্ষার্থী গাজীপুর থেকে মিরপুর এসেছেন কিরণমালা পরিবহনে। নির্ধারিত ৬৯ টাকার ভাড়ার অর্ধেক ৩৫ টাকা। কিন্তু সে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে রাখা হয়েছে ৪৫ টাকা। বাসটি তো ঢাকায়ও চলে। এই সমস্যার সমাধান কী?
খন্দকার এনায়েত উল্যাহ: এটার পরামর্শ কী? আমাদের বলেন। ঢাকার বাইরের কথা আসেনি আমাদের আলোচনার সময়। এই সমস্যার সমাধানের কথাও ভাবব। আশপাশের জেলাগুলোর পরিবহনমালিকদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আমরা দেখেছি, আজ কিছু ক্ষেত্রে অর্ধেক ভাড়া রাখা হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের কটুকথা শোনাতেও দেখা গেছে। অর্ধেক ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের হেয় করা বন্ধ হতে পারে কীভাবে?
খন্দকার এনায়েত উল্যাহ: একটা স্টুডেন্ট শিক্ষিত। তাদের কাছ থেকে ভালো আচরণ আশা করি। বাসশ্রমিক ও শিক্ষার্থী উভয়েরই সংশোধন হওয়া উচিত। এ জন্য অবশ্য বাসশ্রমিকদের কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন। বিআরটিএকে বলব, সব বাসশ্রমিকের কাউন্সেলিংয়ে যাতে প্রোগ্রাম নেয়। বাস শ্রমিক ফেডারেশন ও ইউনিয়নেরও উদ্যোগ নেওয়া উচিত। এ জন্য সময়ের দরকার।
পরিস্থান নামের একটি বাসের ভাড়া তালিকায় লেখা দেখলাম, বছিলা থেকে মিরপুর–১ পর্যন্ত নির্ধারিত ভাড়া ১৮ টাকা। কিন্তু ওয়েবিলের কথা বলে ভাড়া রাখা হচ্ছে ২৫ টাকা। ওয়েবিলের নামে অতিরিক্ত ভাড়া কবে বন্ধ হবে?
খন্দকার এনায়েত উল্যাহ:খন্দকার এনায়েত উল্যাহ: নতুন (বিআরটিএ–নির্ধারিত) ভাড়ার সঙ্গে ওয়েবিল সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত মালিকদের নিতে হবে। বিআরটিএ এ নিয়ে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করছে। তাঁদের গাড়ি জরিমানা করছে, ডাম্পিং করছে।
কিন্তু পরিবর্তন কোথায়?
খন্দকার এনায়েত উল্যাহ: এটা অনেক দিনের একটা খারাপ অভ্যাস। ভালো জায়গায় নিতে সময় লাগবে। এটা নিয়ে বসে নেই আমরা। সবাইকে ডেকে অনবরত কথা বলছি। আশা করি, এবার ঠিক হয়ে যাবে। চট্টগ্রামের অর্ধেক ভাড়ার বিষয়টি ঠিক করার পর।