রাজবাড়ী-২ আসনে (পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী) আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ জিল্লুল হাকিম। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী সাবেক সাংসদ নাসিরুল হক সাবু। তবে তাঁরা একসময় একই দলে ছিলেন। সত্তরের দশকে তাঁরা দুজন পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্রজীবন থেকেই জিল্লুল হাকিম ও নাসিরুল হক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে দুজনই অংশ নেন। ১৯৭৩-৭৬ সালের পাংশা উপজেলা কমিটিতে জিল্লুল হাকিম সভাপতি ও নাসিরুল হক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৯ সালে বিএনপিতে যোগ দেন নাসিরুল হক।
জিল্লুল হাকিম চারবার সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯৯৬ সালে প্রথম নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করে সাংসদ হন। পরেরবার ২০০১ সালে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন নাসিরুল হক। এ নির্বাচনে তাঁর কাছে হেরে যান জিল্লুল হাকিম। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে নাসিরুল হককে পরাজিত করে পুনরায় সাংসদ নির্বাচিত হন জিল্লুল হাকিম। ২০১৪ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে নাসিরুল হক বলেন, ‘বিএনপিতে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণ ছিল। ওই সময়ের সামাজিক বাস্তবতায় আমি বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলাম। একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে বিএনপিতে কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। দেশের অগ্রগতিতে ও সাধারণ মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছি।’
এবারের নির্বাচনে প্রতিপক্ষ জিল্লুল হাকিম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আগেও তাঁর সঙ্গে দুটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। একটিতে জয়ী হয়েছি। নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানাই। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে উঠুক। আমি সংঘাত চাই না।’
এ সম্পর্কে জিল্লুল হাকিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম। নানা রকম প্রতিকূল পরিবেশ অতিক্রম করতে হয়েছে। সব সমস্যা সফলভাবে মোকাবিলা করে আজকের অবস্থানে এসেছি। আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় দল থেকে অনেকেই চলে যেতে পারেন। এতে দলের মধ্যে তেমন প্রভাব পড়ে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯৬ সালে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সাবু ভাইয়ের আম্মাকে সালাম করে এসেছি। এর আগে ১৯৯৫ সালে উভয় দলের নামে মামলা হয়েছিল। আমাদের মামলার সঙ্গে তাদের মামলাও প্রত্যাহার করেছি। সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলাম। কিন্তু ২০০১ সালে তিনি বিজয়ী হওয়ার পর সেই সম্প্রীতি বজায় রাখেননি। বিএনপি-জামায়াত জোটের আমলে ৯টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু আমরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে কোনো মামলা দিইনি। কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হয়নি।’