স্বপন জলদাশ। দেশের টানে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। দেশ স্বাধীন হয়েছে, এটাই তাঁর বড় পাওয়া। তারপরও একটা আক্ষেপ রয়ে গেছে তাঁর। দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন, অথচ এখনো মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি তিনি।
মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন স্বপন জলদাশ। চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার উত্তর আমিরাবাদের জলদাশ পাড়ায় মাটির ঘরে চার ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস তাঁর। ২০০১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জীবিকার তাগিদে কঠোর সংগ্রাম করে যেতে হচ্ছে স্বপন জলদাশকে।
মুক্তিযুদ্ধের সময়কার কথা জানতে চাইলে স্মৃতিকাতর স্বপন জলদাশ বলেন, ১৯৭১ সালে তাঁর বয়স ছিল ২২ বছর। বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা শেষে কূলে এসে জানতে পারলেন হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের কথা। তখনই সিদ্ধান্ত নিলেন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার। পরে ভারতের আসামে গিয়ে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ নেন তিনি। প্রশিক্ষণ শেষে ১ নম্বর সেক্টরের অধীনে চট্টগ্রামের দোহাজারীর কমান্ডার জলিল বকশুর নেতৃত্বে চন্দনাইশের দোহাজারী, বরকল ও ধোপাছড়ি এলাকায় যুদ্ধে অংশ নেন তিনি।
স্বপন জলদাশ বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি আবার নিজের পেশায় ফিরে যান।
সহযোদ্ধা রাখাল কৃষ্ণ দত্ত বলেন, স্বপন জলদাশ মুক্তিযোদ্ধা। অজ্ঞাত কারণে তাঁর নাম মুক্তিবার্তায় আসেনি। তবে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর পাঠানো সনদ পেয়েছেন তিনি।
লোহাগাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আখতার আহমদ সিকদার বলেন, ২০০৪ সালে স্বপন জলদাশসহ ১৩ জনের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি। তবে এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফিজনূর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।