গণধর্ষণের অভিযোগে করা এক মামলায় দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি একই সময়ে গ্রহণ করার প্রেক্ষাপটে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারাফুজ্জামান আনছারীকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। মামলার সিডিসহ (কেস ডকেট) আগামী ১১ নভেম্বর তাঁকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। ওই মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া শাহাদাত হোসেন নামের এক আসামির জামিন আবেদনের শুনানিতে বিষয়টি নজরে এলে ওই আদেশ দেওয়া হয়।
আদালতে শাহাদাতের পক্ষের শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল জলিল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই মামলায় তিন আসামির মধ্যে আসামি শাহাদাত বাবুবাজার এলাকা থেকে এবং কাউছার ওরফে হৃদয় গুলশান-১ থেকে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ গ্রেপ্তার হন। একই বছরের ২৮ মার্চ দুপুর ১২টায় ওই দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারাফুজ্জামান আনছারী। আইনের বিধান অনুসারে, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া আসামিকে অন্তত তিন ঘণ্টা সময় দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, দুই আসামির জবানবন্দি একই সময়ে রেকর্ড হয়েছে। বিষয়টি নজরে এলে হাইকোর্ট ব্যাখ্যা জানাতে ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে সিডিসহ ১১ নভেম্বর আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন। ’
ওই মামলায় নিম্ন আদালতে জামিন চেয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর ব্যর্থ হন শাহাদাত। এর বিরুদ্ধে আপিল করে হাইকোর্টে জামিন চান তিনি। হাইকোর্ট শাহাদাতের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে ওই আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, ধর্ষণের অভিযোগে ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর ভাটারা থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। এজাহারে ভুক্তভোগী তাঁর পূর্বপরিচিত বন্ধু নবীরুল ইসলাম রনি ও ড্রাইভার মো. কাউছার ওরফে হৃদয় ও একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন। এ মামলায় গত বছরের ১৯ জুলাই শাহাদাত হোসেনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলাটি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯–এ বিচারাধীন।
মামলার তিন আসামির সবাই গত বছরের ২৭ মার্চ গ্রেপ্তার হন। নবীরুল ইসলাম রনি ধানমন্ডি মীনাবাজার থেকে গ্রেপ্তার হন। পরদিন সকাল ১০টায় অপর এক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করেন।