দুর্যোগ মৌসুম শুরু হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের তিন হাজার কিলোমিটার নৌপথকে বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছে। এই পথে আগামী সাত মাস (১৫ অক্টোবর পর্যন্ত) সমুদ্রে চলাচল অনুপযোগী নৌযান চলাচলও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) গতকাল এই নির্দেশনা জারি করেছে।
বিআইডব্লিউটিএর বরিশাল কার্যালয়ের নৌ–নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপপরিচালক আজমল হুদা সরকার গতকাল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, দক্ষিণাঞ্চলের তিন হাজার কিলোমিটার নৌপথ দুর্যোগ মৌসুমে উত্তাল থাকায় বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর এই সাত মাস দুর্যোগ মৌসুম হওয়ায় এই পথে ছোট নৌযান চলাচল অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এ জন্য এই নৌপথে সমুদ্রে চলাচল উপযোগী বে–ক্রসিং সনদ জাহাজ ছাড়া অন্য নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। ২০০০ সাল থেকে বিআইডব্লিউটিএ এ বাধ্যবাধকতা আরোপ করে আসছে।
সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানান, ১৫ মার্চ থেকে কালবৈশাখী মৌসুম শুরু হয়েছে। এ ছাড়া অক্টোবর মাস পর্যন্ত নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে। এ জন্য উত্তাল থাকে উপকূলের এসব নদ-নদী। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা থাকা নদ-নদীগুলোর মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে চারটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে বরিশাল-লক্ষ্মীপুর জেলার মজুচৌধুরীরহাট এবং ভোলার ইলিশা-মজুচৌধুরীরহাট, ভোলার মীর্জাকালু-নোয়াখালীর চর আলেকজান্ডার এবং ভোলার শশীগঞ্জ-মনপুরা। এসব রুটে চলাচলকারী ২৮টি যাত্রীবাহী নৌযানের বে-ক্রসিং সনদ না থাকায় সেগুলো সাত মাস বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ সময় রুটের যাত্রীদের যাতায়াত নিরাপদ করতে বিআইডব্লিউটিসির সি–ট্রাক চলাচল করবে।
তবে যাত্রীদের অভিযোগ রয়েছে, কয়েক বছর ধরে এসব পথে অনিয়মিতভাবে সি–ট্রাক চলাচল করে। এই সুযোগে স্থানীয় ঝুঁকিপূর্ণ অনেক নৌযান যাত্রী পরিবহন করে আসছে। যাতায়াতের প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে এসব ছোট ও ঝুঁকিপূর্ণ নৌযানে চলাচল করতে বাধ্য হন এসব পথের হাজার হাজার যাত্রী।
বিআইডব্লিউটিসি বরিশাল কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা এসব নৌপথে সি–ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। বরিশাল-মজুচৌধুরীরহাট নৌপথের নির্ধারিত সি–ট্রাক খিজির-৮ এখন ডকইয়ার্ডে রয়েছে। আর ইলিশা-মজুচৌধুরীরহাট নৌপথে চলাচলকারী সি–ট্রাক শিগগিরই চালু করা হবে। অপর দুটি রুটের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বিআইডব্লিউটিএর বরিশালের নৌ–নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক আজমল হুদা বলেন, সমুদ্রে চলাচলের উপযোগী সনদ নেই এমন কোনো নৌযান চলাচল করতে পারবে না। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন যাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে, সে ব্যাপারেও অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিএ প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে।