সরকারি দলের সাংসদেরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে উন্নয়ন বিস্ময়। মানুষ উপলব্ধি করেছে, শেখ হাসিনার বিকল্প নেতৃত্ব নেই। তবে উন্নয়নের পাশাপাশি রাষ্ট্রকে মানবিকও হতে হবে।
আজ রোববার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তাঁরা এসব কথা বলেন। পাশাপাশি বিএনপির সমালোচনাও করেন সাংসদদের কেউ কেউ।
সরকারি দলের সাংসদ কবিরুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন অর্থনৈতিক মুক্তির দ্বারপ্রান্তে। এখন বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে বিস্ময়। তবে মানুষের মনোজগৎ কতটা পরিবর্তন হচ্ছে, রাষ্ট্র কতটা মানবিক হচ্ছে, সেটাও দেখতে হবে। মানবিক রাষ্ট্র না হলে সেটা মঙ্গলময় রাষ্ট্র হয় না।
ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে কবিরুল হক বলেন, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের পর এখন ভারতেও ধর্মীয় রাজনীতির কারণে গণতন্ত্র শঙ্কার মধ্যে পড়ে গেছে। বাংলাদেশে এখন ইসলামের নামে ওয়াজ মাহফিলের সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। আগে গণপরিবহনে লেখা দেখা যেত ‘আপনার সন্তানকে স্কুলে পাঠান’। এখন দেখা যায়, ‘আপনার সন্তানকে মাদ্রাসায় পাঠান’। এগুলো আশঙ্কাজনক।
সরকারি দলের সাংসদ নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, দেশের উন্নয়ন এখন সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। খাদ্য, শাক, সবজি, মাছ, মাংস উৎপাদনে দেশ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। মানুষ উপলব্ধি করেছে, শেখ হাসিনার বিকল্প নেতৃত্ব নেই। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে গেলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
সংসদে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দাবির সমালোচনা করেন সরকারি দলের সাংসদ মৃণাল কান্তি দাস। তিনি বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) কি রানী ভিক্টোরিয়া হয়ে গেছেন যে তাঁকে আইনের ঊর্ধ্বে রাখা হবে? এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন, সে জন্য সাজা হয়েছে।
বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই সাংসদ বলেন, খালেদা জিয়া অনেক মায়ের কোল খালি করেছেন। অনেককে বিধবা করেছেন। খালেদা জিয়া অত্যাচারী, নিষ্ঠুর মানুষ হিসেবে পরিচিত। বিএনপি চায় না আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক। মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসীরাই ক্ষমতায় ও বিরোধী দলে থাকবে। পাকিস্তানে বিশ্বাসীদের ঠাঁই এ দেশে হবে না। দেশের মানুষ আর কখনো তাদের বিশ্বাস করবে না।
আবদুল্লাহ আল ইসলাম বলেন, বিএনপি এখন নির্যাতনের কথা বলে। নির্যাতন কী—সেটা দেখা গেছে বিএনপির আমলে। তারা হত্যা, ধর্ষণ করেছে। আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতা-কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে নিয়েছে।
তাঁর বক্তব্যে জেলাপর্যায়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের আলাদা দপ্তর করার পরামর্শ দেন সরকারি দলের আরেক সাংসদ মকবুল হোসেন। তিনি বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় সরাসরি এসব দপ্তর নিয়ন্ত্রণ করবে। এতে ভূমিসেবা আরও সহজ হবে। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সম্মানী বাড়ানোরও দাবি জানান।
অন্যদের মধ্যে সরকারি দলের সাংসদ হাছান ইমাম খান, শাহীন আক্তার, জাতীয় পার্টির পনির উদ্দিন আহমদ, সংরক্ষিত আসনের আরমা দত্ত প্রমুখ বক্তব্য দেন।