ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে অপহৃত জাতিসংঘের পাঁচ কর্মীর মধ্যে একজন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন৷ তাঁর নাম এ কে এম সুফিউল আনাম৷ তিনি ইয়েমেনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।
সুফিউল আনামের পরিবারের বরাতে এসব তথ্য প্রথম আলোকে জানিয়েছেন জাতিসংঘের উচ্চ পদে কর্মরত আরেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা। আজ রোববার দুপুরে তিনি সুফিউলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর মাধ্যমে প্রথম আলোকে বেশ কিছু তথ্য জানানো হয়৷
গত শুক্রবার কাজ শেষে অ্যাডেনে ফেরার সময় জাতিসংঘের ৫ কর্মী অপহৃত হন। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, জাতিসংঘ স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার বিষয়টি জানিয়েছে। তবে তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি৷
জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সুফিউল আনাম সাবেক একজন সেনা কর্মকর্তা। তিনি ২০ বছর ধরে জাতিসংঘে কাজ করছেন। সুফিউল ইয়েমেনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে অপহরণ হওয়া বাকিরা ইয়েমেনেরই নাগরিক। একমাত্র সুফিউলই বিদেশি৷
সুফিউলের পরিবারের বরাতে ওই কর্মকর্তা বলেন, জাতিসংঘের পক্ষ থেকে নিয়মিত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সুফিউলের প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের নাম নেওয়া হয়েছে৷ সুফিউল পুরোপুরি সুস্থ আছেন বলে তাদের জানানো হয়েছে। স্থানীয় একটি গোষ্ঠী অপহরণ করেছে বলে তাদের প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে৷
জাতিসংঘের ওই বাংলাদেশি কর্মকর্তা বলেন, সুফিউলের স্ত্রী ঢাকাতেই থাকেন৷ তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তাঁরা বর্তমানে প্রবাসী। ২০ বছর আগে সুফিউল জাতিসংঘে যোগ দেন৷ ষাটোর্ধ্ব সুফিউলের কিছুদিনের মধ্যেই অবসরে যাওয়ার কথা।
সুফিউলের বিষয়ে জানতে ঢাকার জাতিসংঘ কার্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রথম আলো। তবে এ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি৷
ইয়েমেনে নিয়োজিত জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তার মুখপাত্র রাসেল গিকি রয়টার্সকে বলেন, আবিয়ান প্রদেশ ওই পাঁচ কর্মীকে অপহরণ করা হয়েছে। তাঁদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ইয়েমেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখেছে জাতিসংঘ।
২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনে ইরান–সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অভিযান চলছে। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুতি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা আক্রমণ করে মানসুর হাদির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ওই বছরের মার্চ থেকে অভিযান শুরু করে সৌদি জোট। ইয়েমেন সংঘাতে হাজারো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখো মানুষ।