বিশ্বে এখন ভয়াবহ এক আতঙ্কের নাম কোভিড-১৯। এ পর্যন্ত প্রায় ২৭ হাজারের বেশি মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে ভয়ংকর করোনা। ইতিমধ্যে বাংলাদেশেও ভাইরাসটি তার আগ্রাসী থাবা বসিয়েছে বিধায় আমরাও ঘরবন্দী অবস্থায় গভীর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছি। চীন, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইরানসহ বিভিন্ন দেশ করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে চরম বিপদে হাবুডুবু খাচ্ছে। শহর, এমনকি পুরো দেশ পর্যন্ত ‘শাটডাউন’ করা হয়েছে।
আজ যেমন সব মানবসভ্যতা করোনাভাইরাস নামের এক অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে কঠিন যুদ্ধে প্রাণপণ লড়ছে। ঠিক তেমনই ১৯৩০-এর দশক থেকে স্বাধীন রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের মুসলিম নাগরিকেরা নানা নির্যাতন, নিষ্পেষণের শিকারে বাস্তুচ্যুত হয়ে নিজ বসতবাড়িতে ফেরার বাসনায় প্রাণপণ লড়ছে। ১৯৪৮ সালে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় প্রায় ৭ লাখের মতো ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যারা আজও ঘরে ফিরতে পারেনি। প্রায় ৭২ বছর ধরে এ বিষয়ে বিশ্ববিবেকও আশ্চর্যজনকভাবে নির্বাক ও নিশ্চুপ হয়ে রয়েছে। আমেরিকা যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সম্প্রসারণবাদী, দখলদার ও দখলদার দেশের সহযোগী তার নমুনা ফিলিস্তিন।
কথিত ‘শতাব্দীর সেরা পরিকল্পনা’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ায় ফিলিস্তিনকে বাদ দিয়ে কেবল ইসরায়েলি ইহুদি নেতাদের সামনে রেখে তাঁর তথাকথিত ‘শতাব্দীর সেরা পরিকল্পনা’ প্রকাশ করেছেন। যার মাধ্যমে কোনো শান্তি কিংবা সমাধানের ন্যূনতম সম্ভাবনা নেই। চুক্তিতে স্বাধীনতার নামে যে একপেশে প্রস্তাব চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা পরাধীনতারই নামান্তর! তাই ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শতভাগ প্রহসন। চুক্তিতে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনের সঙ্গে শুধু ইসরায়েলি স্বার্থ প্রাধান্য পেয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র, জেরুজালেম ও জর্ডান উপত্যকার প্রধান স্তম্ভেরও লঙ্ঘন করেছেন ট্রাম্প। ফিলিস্তিনকে বিপন্ন করে ইসরায়েলের স্বপ্ন পূরণের যত নীলনকশাই ট্রাম্প করুন না কোন, তা বাস্তবায়ন অত সহজ নয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ট্রাম্প প্রশাসনই সবচেয়ে বেশি ইসরায়েলঘেঁষা নীতি নিয়ে চলছে। তাঁর মেয়াদেই ওয়াশিংটন কয়েক দশকের পুরোনো দুই রাষ্ট্রনীতি থেকে সরে আসে। শুধু তা–ই নয়, ইতিপূর্বে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘায়িত এই সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক আইন অগ্রাহ্য করে ওই পরিকল্পনা প্রণয়নের পুরো প্রক্রিয়ায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বিশেষত কট্টরপন্থী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, ট্রাম্পের ইহুদি জামাতা ও উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার যৌথ প্রযোজনায় প্রণীত একটি ইহুদি মঞ্চনাটক। তথাকথিত এই শান্তি পরিকল্পনার মূল পরিকল্পনাকারী জারেড কুশনার নিজে কট্টর ইহুদি ধর্মাবলম্বী এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদি লবির শক্তিশালী সমর্থক। চুক্তিতে ইহুদি রাষ্ট্রটির স্বার্থ শতভাগ অটুট রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ পুরোপুরি জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা ঘোষণার পর নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের জন্য আপনার মতো এমন মহান বন্ধু আর কখনো আসেনি।’
জেরুজালেমকে ইসরায়েলের অবিভক্ত রাজধানী হিসেবে রক্ষার অঙ্গীকার করা হয়েছে ওই পরিকল্পনায়। হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প বলেন, এ প্রস্তাব ফিলিস্তিনিদের জন্য শেষ সুযোগ। গত বছরের জুনে বাহরাইনে এক সম্মেলনে ফিলিস্তিনিদের অর্থনৈতিক মুক্তি ও সংঘাতের অবসানের লক্ষ্যে এই চুক্তির ব্যাপারে জানান ট্রাম্প। একই সঙ্গে ওই সম্মেলনে ফিলিস্তিনে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেন তিনি। মার্কিন পরিকল্পনায় এই জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ভাগাভাগির পরিবর্তে ‘অবিভক্ত’ রাজধানী হিসেবে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা বলেছেন।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
পরিকল্পনা প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের রাষ্ট্রদূতেরা। ট্রাম্পের দাবির পক্ষে মধ্যপ্রাচ্যে সমর্থন বাড়ার পক্ষে কিছু প্রমাণও তুলে ধরেন তাঁরা। সৌদি আরব ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রশংসা করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানান।
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে সমস্যা আরও বাড়বে বলে মনে করেন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অমীমাংসিত দ্বন্দ্বের মধ্যে পক্ষপাতদুষ্ট সমাধান প্রস্তাবে ঝুঁকি বাড়ানো সমর্থনযোগ্য নয়।
অন্যদিকে এই পরিকল্পনাকে আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এই শান্তি পরিকল্পনার কিছু অংশ জাতিসংঘের প্রস্তাবের সম্পূর্ণ বিপরীত। ফলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা অবশ্যই প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ধামাধরা সৌদি আরবসহ কিছু আরব দেশ এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানালেও মুসলিম বিশ্ব তথা ফিলিস্তিনিদের স্বার্থের পক্ষে যেসব দেশ কথা বলে, তারা কেউই এটিকে সমর্থন করেনি। আরব লিগ, ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তান ট্রাম্পের পরিকল্পনা নাকচ করেছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্ব ও জাতিসংঘ পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব অবৈধ মনে করলেও এখন সেটি বৈধ করে দেওয়া হলো। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, জাতিসংঘ এমন একটি শান্তিচুক্তি চায়, যা জাতিসংঘের প্রস্তাবনা, আন্তর্জাতিক আইন ও দ্বিপক্ষীয় সম্মতির ভিত্তিতে হবে। ইসরায়েলের মানবাধিকার গোষ্ঠী বিসালেম বলেছে, এই প্রস্তাবটি জাতিবিদ্বেষ তৈরি করবে। ফিলিস্তিনিদের পরিণত করা হবে ক্ষুদ্র, অবরুদ্ধ, বিচ্ছিন্ন ছিটমহলে, যাদের নিজেদের জীবনের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।
নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব উপেক্ষা
১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় ইসরায়েল গোলান মালভূমির একটি অংশ দখল করে নেয়। ১৯৮১ সালে এটি ইসরায়েলের অংশ হিসেবে সংযুক্ত করা হয়। কিন্তু ওই বছরই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ গোলানের সংযুক্তিকরণকে অবৈধ বলে ৪৯৭ নম্বর প্রস্তাব পাস করে। ট্রাম্প নিরাপত্তা পরিষদের সেই প্রস্তাব উপেক্ষা করে গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কুশনার মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক উপদেষ্টা নিয়োগের পরই মূলত কথিত শান্তি কর্মপরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম একতরফা হয়ে যায়। ইসরায়েল বিশ্বের সবচেয়ে বড় সম্প্রসারণবাদী, দখলদার ও দখলদার দেশের সহযোগী হয়ে দানবীয় শক্তি নিয়ে চলার কারণে যুগে যুগে এই ইহুদিদের খ্রিষ্টানরা মেরেছে, নাৎসিরা মেরেছে, ব্রিটিশরা মেরেছে, ইউরোপ থেকে নির্বাসিত হয়েছে! অ্যাডলফ হিটলার প্রায় ৬০ লাখ ইহুদি মারার পর তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন, ‘আমি ইচ্ছা করলে সব ইহুদিদের মেরে ফেলতে পারতাম। কিন্তু কিছু রেখে দিলাম এ জন্য যে পরবর্তী প্রজন্মরা যাতে বুঝতে পারে ওরা কত জঘন্য, আর আমি কেন ইহুদি বিদ্বেষী ছিলাম।’
ফিলিস্তিনিদের ভূমি হারানোর ইতিহাস
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যানের হাত ধরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোল শুরু হয়েছিল। ট্রুম্যান ছিলেন ফিলিস্তিনিদের ভূমিতে ইসরায়েল রাষ্ট্রের গোড়া পত্তনের প্রধান মদদদাতা। যদিও এর প্রায় ৩০ বছর আগে থেকেই সেখানে ইহুদিদের জাতীয় ভূমি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। ১৯৩০-এর দশকে ফিলিস্তিনের গাজা থেকে দুই মাইল উত্তরে কিবুটসে পোল্যান্ড থেকে আসা ইহুদিরা খামার গড়ে তুলেছিল। তখন থেকে ধীরে ধীরে ভূমিতে অধিকার হারাতে শুরু করে ফিলিস্তিনরা। ১৯৪৮ সালে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় প্রায় ৭ লাখের মতো ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়, যারা আজও ঘরে ফিরতে পারেনি। ১৯১৭ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিন ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এ সময় তারা সেখানে ইহুদি জাতিরাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা করে। যার চূড়ান্ত রূপ দেন হ্যারি ট্রুম্যান। সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ সরকার এই রাষ্ট্রটির জন্ম দেওয়ার পর থেকেই ৭ দশক ধরে সহিংসতা-সংঘাত চলে আসছে। দীর্ঘদিনের সেই সংঘাত অবসানে ট্রাম্পের এই তথাকথিত ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ আদৌ কোনো ভূমিকা রাখতে সমর্থ হবে বলে মনে হয় না। কারণ, এখানে একটি পক্ষকে পুরোপুরি কোণঠাসা করা হয়েছে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিন খণ্ডাংশে পরিণত
১৯৪৭ সালে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের যে প্রস্তাব করা হয়েছিল, তাতে ছিল পুরো ভূখণ্ডের ৪৩ ভাগ। ২০২০ সালের পরিকল্পনায় পুরো ফিলিস্তিন টুকরা টুকরা খণ্ডাংশ! ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস আর্থার বেলফোর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ইহুদিদের জন্য কথিত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে ব্রিটেনের অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছিলেন, যা ইতিহাসে ‘বেলফোর ঘোষণা’ নামে পরিচিতি। ব্রিটেনের ওই অঙ্গীকারকে ফিলিস্তিনিদের ওপর নেমে আসা বিপর্যয়ের অন্যতম অনুঘটক হিসেবে দেখা হয়। ব্রিটেনের এই ঘোষণার পর কমপক্ষে সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনি আরব বিশ্বে গণবিতাড়নের শিকার হয়। বেলফোর ছিল ফিলিস্তিনিদের ভূমিতে ইসরায়েল রাষ্ট্রের গোড়াপত্তনের প্রধান মদদদাতা। ঠিক একইভাবে ট্রাম্পের এই শান্তি পরিকল্পনাকে ‘নতুন বেলফোর ঘোষণা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনিরা। আন্তর্জাতিক আইন ছাড়াও জাতিসংঘের ২৪২ রেজল্যুশনে বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধের মাধ্যমে দখল করা কোনো ভূমি অধিগ্রহণ ও বসতি স্থাপন করা যাবে না। এরপরও ইসরায়েল পশ্চিম তীরে একের পর এক বসতি নির্মাণ ও সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে চলছে।
চুক্তিতে অধিকারবঞ্চিত ফিলিস্তিন
ট্রাম্পের কথিত ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তিতে ফিলিস্তিনিদের ন্যূনতম অধিকার দেওয়া হয়নি। সাধারণভাবে রাষ্ট্রের প্রধান উপাদান হলো সার্বভৌমত্ব। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় চার বছর পর যে ফিলিস্তিন গঠিত হবে, সেটির সীমানা ও আকাশ নিয়ন্ত্রণ করবে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের কোনো সামরিক বাহিনী অথবা স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি থাকবে না। প্রকৃতপক্ষে ট্রাম্পের পরিকল্পনা হলো বৃহত্তর ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ভূমি গ্রাসের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা। ইসরায়েলকে তিনি পশ্চিম তীরের যে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ স্থান দেওয়ার কথা বলেছেন, সেটিকে ইসরায়েল পুরোপুরি কবজা করবে। সেখানে নামমাত্রও কোনো অধিকার থাকবে না ফিলিস্তিনিদের।
ঘোষণার আগেই চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া
ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিশেষ দিকটি হলো, যা প্রকাশ করেছেন তা বাস্তবায়নের কাজ আগেভাগেই শুরু করেছেন। চুক্তি বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করে গত বছর তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেওয়া হয়। এখন বলেছেন, জেরুজালেম হবে ইসরায়েলের অখণ্ড রাজধানী। ট্রাম্প প্রশাসন পশ্চিম তীরে ইহুদি পুনর্বাসনের কার্যক্রমকেও বৈধ হিসেবে আগেই স্বীকৃতি দিয়েছে। এখন বলছে, পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতিগুলো ইসরায়েলের অংশ হবে। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় বলা হচ্ছে, ফিলিস্তিনিরা নিজ দেশে ফেরার অধিকার পাবে না। আর আগে থেকেই ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী জাতিসংঘকে অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা মধ্যপ্রাচ্যের সংকট আরও ঘনীভূত এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের মাত্রা তীব্রতর করবে বলে আমরা মনে করি। মুসলিম বিশ্বের সামনে দৃশ্যমান এক দুশমন, যারা যুগের পর যুগ ধরে একটি গোষ্ঠীতে, একটি শান্তিপ্রিয় মানবসভ্যতাকে, জ্বালাও-পোড়াও, নির্যাতন-নিষ্পেষণ, ধর্ষণ, নিজ ভূমি থেকে বিতাড়ন করলে দেখেও না দেখার ভান করে, শত্রুর চোখ থেকে নিজেকে লুকাতে উটপাখির মতো বালুতে মুখ গুঁজছে, যা মোটেই কাম্য নয়। আমরা ইহুদিবাদের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট এই ষড়যন্ত্রের ফাঁদে না পড়ার জন্য মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানাই।