সিরাজগঞ্জ শহরের বুক চিরে একসময়ের প্রমত্তা বড়াল নদ এখন বিলুপ্তপ্রায়। কিন্তু বড়ালের ওপর নির্মিত ইলিয়ট ব্রিজটি শতাব্দীর স্বাক্ষর হিসেবে এখনো ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। জেলার ঐতিহ্য আর গর্বের এই সেতুর ১২৭তম বর্ষপূর্তিতে তাই উৎসবে মেতেছিল সিরাজগঞ্জের মানুষ। সেই আয়োজন থেকে শতবর্ষী সেতুটি সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়।
জেলার প্রাচীনতম এই সেতুটির ১২৭ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে আয়োজন করা হয় এক অনুষ্ঠানের। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে কেক কাটেন সিরাজগঞ্জ পৌর মেয়র আবদুর রউফ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আমিনুল ইসলাম, মিলন ইসলাম খান, মনিরুজ্জামান নূরে এলাহী, ফেরদৌস রবিন প্রমুখ। শহরের প্রাণকেন্দ্রে স্থাপিত দৃষ্টিনন্দন ইলিয়ট সেতুর (বড়পুল) মধ্যভাগে আয়োজিত এই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে নানা বয়সী আর শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশ নেয়।
একসময়ের স্রোতস্বিনী বড়াল নদের ওপরে ১৮৯২ সালে নির্মাণ করা হয় ইলিয়ট সেতুটি। সে সময়ে বড়াল নদ ছিল প্রচণ্ড স্রোতস্বিনী। এই নদীপথে শত শত নৌকা আর স্টিমার কলকাতা থেকে সরাসরি মালপত্র আসত সিরাজগঞ্জে। আসাম এবং পূর্ব বাংলার অন্যান্য স্থানেও মাল পরিবহন করা হতো। সে সময় নদীর দুই তীরে ব্যবসা-বাণিজ্য জমজমাট থাকলেও নদীর দুই পারের মধ্যে যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। খেয়া পারাপার ছিল একমাত্র ভরসা।
সিরাজগঞ্জবাসীর দুর্ভোগের কথা ভেবে তৎকালীন সিরাজগঞ্জ মহকুমা প্রশাসক ব্রিটিশ নাগরিক বিটসন বেল এই সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ১৮৯২ সালের ৬ আগস্ট বাংলা ও আসামের তৎকালীন গভর্নর স্যার চার্লস ইলিয়ট এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তাঁর নাম অনুসারেই সেতুর নামকরণ করা হয় ইলিয়ট ব্রিজ (সেতু)। সে সময়ে ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করে স্টুয়ার্ড হার্টল্যান্ড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। একটিমাত্র খিলানের ওপর নির্মিত এই সেতুর দৈর্ঘ্য ১৮০ ফুট এবং প্রস্থ ১৬ ফুট।