জামদানির পর এবার বাংলাদেশের ইলিশ মাছ ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এর ফলে ইলিশ বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পেল। পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর বলছে, ভৌগোলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন) পণ্য হিসেবে ইলিশ নিবন্ধনের সব প্রক্রিয়া শেষ। এক সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে মৎস্য অধিদপ্তরের হাতে ইলিশের জিআই নিবন্ধনের সনদ তুলে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার সানোয়ার হোসেন আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মৎস্য অধিদপ্তর আমাদের কাছে রুপালি ইলিশের ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে। ওই আবেদনের পর তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের ১ জুন গেজেট প্রকাশ করা হয়। আইন অনুসারে গেজেট প্রকাশিত হওয়ার দুই মাসের মধ্যে দেশে বা বিদেশ থেকে এ বিষয়ে আপত্তি জানাতে হয়। কিন্তু কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে কোনো আপত্তি জানায়নি। সে অনুসারে এ পণ্য এখন বাংলাদেশের স্বত্ব। এখন এটি চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধনের প্রক্রিয়াধীন আছে। এক সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে এর স্বত্ব মৎস্য অধিদপ্তরের কাছে তুলে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই ইলিশ বাংলাদেশের সম্পদ আমাদের জাতীয় মাছ। এ বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে পেতে আবেদন করি। এই ইলিশ আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে। এটি আমাদের একার অর্জন নয়, গোটা জাতির অর্জন।’
বাংলাদেশের পণ্য আন্তর্জাতিকভাবে যেন স্বীকৃতি পায়, সে জন্য আন্দোলন করে বিল্ড বেটার বাংলাদেশ। সংগঠনটির অন্যতম উদ্যোক্তা ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক বিপাশা মতিন বলেন, জামদানির পর এটি হচ্ছে দ্বিতীয় পণ্য, যেটি জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল। এটি একটি অত্যন্ত আনন্দের খবর। এর ফলে অন্যান্য আরও ৭০টি পণ্য জিআই পণ্য হিসেব স্বীকৃতি পাওয়ার পথ সুগম হলো।
ওয়ার্ল্ড ফিশের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিশ্বের মোট ইলিশের ৬৫ শতাংশ উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। ভারতে ১৫ শতাংশ, মিয়ানমারে ১০ শতাংশ, আরব সাগর তীরবর্তী দেশগুলো এবং প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগর তীরবর্তী দেশগুলোতে বাকি ইলিশ ধরা পড়ে।
ইলিশ আছে—বিশ্বের এমন ১১টি দেশের মধ্যে ১০টিতেই ইলিশের উৎপাদন কমছে। একমাত্র বাংলাদেশেই ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে।