সারা দিন রোজা রেখে সন্ধ্যায় ইফতারে বিভিন্ন পদের খাবারের পাশাপাশি একটু মিষ্টিজাতীয় খাবার চাই-ই চাই। বুন্দিয়া, জিলাপি কিংবা ছানার পোলাও ইফতারে আনে বৈচিত্র্য। কিন্তু শেরপুরের রোজাদারদের ইফতারিতে অনন্য বৈচিত্র্য আনে মাষকলাইয়ের ডালের তৈরি ‘ডাইলের আমিত্তি’।
শেরপুরের ভোজনবিলাসী মানুষমাত্রই ইফতারে চান ঘোষপট্টির ডাইলের আমিত্তি।
শেরপুর জেলার প্রসিদ্ধ এই মিষ্টি শরত্ ও শীতকালে তৈরি হলেও দীর্ঘ এক যুগ ধরে ইফতারে খাবারের উপকরণ হিসেবে রমজান মাসেও তৈরি করা হচ্ছে। ইফতারিতে ঝাল খাবারের পাশাপাশি রোজাদারদের কাছে এই মিষ্টি বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে পরিণত হয়েছে। এই মিষ্টির জন্য প্রতিদিন বিকেলে ঘোষপট্টির মিষ্টির দোকানগুলোতে ভিড় জমে যায়। শেরপুর জেলা শহরের মুন্সিবাজারের ঘোষপট্টির অন্তত ১০টি দোকানে তৈরি হচ্ছে এই মিষ্টি। এসব দোকানে প্রতিদিন গড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০ কেজি ‘ডাইলের আমিত্তি’।
শেরপুরের প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকান দুর্গাচরণ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক শ্রীমঙ্গল চন্দ্র ঘোষ (৬০) বলেন, কাঁচা মাষকলাইয়ের ডাল ভালো করে ভিজিয়ে রেখে শিলপাটায় গুঁড়ো করা হয়। এরপর তাতে পরিমাণমতো চালের গুঁড়ো মেশানো হয়। কাঁচা আমিত্তি তৈরি করে উচ্চ তাপমাত্রায় তেলে ভাজা হয়। পরে ভাজা আমিত্তিগুলো চিনির শিরায় কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে তা বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়।
শেরপুর জেলা শহরের দুর্গাচরণ মিষ্টান্ন ভান্ডার, প্রেমানন্দ গ্র্যান্ড সন্স, শ্রীকৃষ্ণ মিষ্টান্ন ভান্ডার, নন্দ গোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডার, বল্লভ মিষ্টান্ন ভান্ডার, মা ভবতাঁরা টি স্টলসহ বিভিন্ন দোকানে এই প্রসিদ্ধ মিষ্টি কিনতে পাওয়া যায়। এই মিষ্টি প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বল্লভ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক হরিহর ঘোষ বলেন, ‘ডাইলের আমিত্তি’ মৌসুমি মিষ্টি হিসেবে শরত্ ও শীতকালে তৈরি করা হয়। কিন্তু রোজাদারদের চাহিদার কারণে এখন তাঁরা রমজান মাসেও তা তৈরি করেন। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রমজান মাসে এই মিষ্টির চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। বিশেষ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ইফতার মাহফিলে এই মিষ্টি রোজাদারদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।