আরিশা। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তার বেড়ে ওঠা সুন্দর সুজলা সুফলা শান্তিপূর্ণ একটি গ্রামে। প্রতিদিন সকাল শুরু হয় পাখির কিচিরমিচির ডাকে। তার বাসার সামনে যে আতা গাছটা আছে সেখানে বসে চড়ুই আর শালিক পাখি তার ঘুম ভাঙিয়ে দেয়। আরিশা পড়াশোনায় ও খুব ভালো। তার অনেক স্বপ্ন। সে অনেক বড় হবে। মন দিয়ে পড়তে বসে আরিশা। নিয়মিত স্কুলে যায়।
আর এক সপ্তাহ পরেই তার বার্ষিক পরীক্ষা। তার এমনিতে রোল ১০। তার খুব ইচ্ছা সে প্রথম হবে। কিন্তু কেন জানি সব সময় তার বান্ধবী নাদিয়া প্রথম হয়। এইবার আরিশা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সে প্রতিবারের চেয়ে এইবার একটু বেশি মনোযোগ দিয়ে পড়েছে। এখনো সে ভালোভাবে পড়ছে। পরীক্ষা শুরু হলো। দেখতে দেখতে শেষও হয়ে গেল। আরিশা অপেক্ষায় ফলে।
ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার দিন চলে আসল। নিয়ম অনুসারে ফলাফল জানার জন্য সবাই স্কুলে হাজির। স্কুলের আঙিনায় সব ছাত্র-ছাত্রী আড্ডা দিচ্ছিল। সবাই বলাবলি করতে লাগল নাদিয়া প্রথম হবে। এদিকে আরিশা এমনিতেই টেনশনে আছে আবার এসব শুনে তার ভয় আরও বাড়তে লাগল। ইতিমধ্যে প্রধান শিক্ষক ফলাফল নিয়ে সবার সামনে হাজির। সবাই উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। আরিশা ভয়ে নিস্তব্ধ হয়ে গেল। সে ভাবতে লাগল আমার এই ছোট ইচ্ছাটি কি পূরণ হবে না! অবশেষে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঘোষণা করা হলো। নাদিয়া দ্বিতীয়। হঠাৎ করেই স্যার, আরিশার দিকে তাকাল। আরিশা সত্যি ভয় পেয়ে যায়। সে নিজেকে মনে মনে সান্ত্বনা দিয়েই দিল, না এবার ও হল না। পরক্ষণেই স্যার এর মুখ থেকে আরিশা নামটি শুনে চমকে উঠল সে। সঙ্গে সঙ্গে পাশের সহপাঠীরা তাকে অভিনন্দন জানাতে লাগল। আর আনন্দে আরিশা কান্না করে দিল। সে যে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না।
অবশেষে আরিশা পেরেছে। প্রবল ইচ্ছা শক্তি থাকলে যেকোনো বাধা খুব সাফল্যের সঙ্গে অতিক্রম করা যায়। যা কোনো বাধা মানে না। পরিশ্রম, দৃঢ়বিশ্বাস যেকোনো কাউকে সফলতার শীর্ষে পৌঁছে দেয়।