দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থান উন্নতি হচ্ছে। তবে তাঁর বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখের (৭০) হাত- পা অবশ হয়ে গেছে। রোববার ওমর আলীকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে আনা হয়েছে। এত দিন তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ইউএনওর বাবার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ঢাকার নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক বদরুল আলম গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওমর আলীর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তাঁর চার হাত-পা অবশ হয়ে আছে। এ ছাড়া তাঁর স্পাইনাল কর্ডেও আঘাত রয়েছে।’
হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের নিউরো ট্রমা সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সালামকে প্রধান করে ওমর আলীর চিকিৎসায় ১২ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আজ সোমবার মেডিকেল বোর্ড বসে তাঁর চিকিৎসা নিয়ে বৈঠক করবে। ওমর আলী এখন অধ্যাপক আবদুস সালামের অধীন চিকিৎসাধীন।
ইউএনও ওয়াহিদা খানমের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তিনি হাসপাতালের হাইডিপেডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) নিউরো ট্রমা সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. জাহেদ হোসেনের অধীন। তাঁর অবস্থা সম্পর্কে হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক বদরুল আলম জানান, ওয়াহিদার শরীরের ডান দিকটা অবশ হলেও এখন তিনি ডান হাত নাড়াচাড়া করতে পারছেন। তবে তাঁর ডান পা অবশ হয়ে আছে। ফিজিওথেরাপিতে তাঁর ডান পা স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২ সেপ্টেম্বর রাতে দুর্বৃত্তরা ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ চত্বরের ইউএনওর সরকারি বাসভবনে ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা ও তাঁর বাবাকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। হামলার পরদিন ইউএনও ওয়াহিদাকে ঢাকার নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে এনে অস্ত্রোপচার করা হয়। ৭০ বছর বয়সী ওমর আলী ডায়াবেটিসের রোগী। হামলায় তিনি ঘাড়ে আঘাত পান।
ইউএনও ওয়াহিদা ও তাঁর বাবার ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে রোববার দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সরকারি বাসভবনে যখন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নিরাপদ নন, তখন সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপদ এ কথা বলা যায় না। মানববন্ধনে অংশ নেন বোর্ডের সহাকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রেজাউল করিম চৌধুরী, সেকশন অফিসার সৈয়দা সানজিদা তাবাসসুমসহ কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা।