২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাংসদ ইয়াসিন আলীর নামে কোনো গাড়ি ছিল না। চলাচল করতেন একটি মোটরসাইকেলে। পাঁচ বছরে সাংসদ ইয়াসিনের আয় ও সম্পদ দুটোই বেড়েছে। এই সময়ে তাঁর আয় ১৬ শতাংশ এবং অস্থাবর সম্পদ প্রায় ২২ শতাংশ বেড়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় সাংসদ ইয়াসিন আলীর যুক্ত করা কাগজপত্র ঘেঁটে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইয়াসিন আলী ২০১৪ সালে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। তিনি হলফনামায় তাঁর পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন অধ্যাপনা ও সমাজসেবা। এবার বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২৭ লাখ ১ হাজার ৯৯৭ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে ২৬ হাজার ৮৮০ টাকা ও সাংসদ হিসেবে সম্মানী ভাতা ২৬ লাখ ৭৫ হাজার ১১৭ টাকা আয় করেছেন। ২০১৪ সালে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ৪ লাখ ৩২ হাজার ৫৬০ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ১ লাখ টাকা ও শিক্ষকতা থেকে ২ লাখ ৮২ হাজার ৫৬০ টাকা আয় করেছিলেন।
২০১৪ সালের নির্বাচনে হলফনামায় ইয়াসিন আলীর নিজ নামে ২ একর ৬৪ শতক জমির দাম ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও তাঁর স্ত্রীর নামে দশমিক ৯৩ একর জমির দাম ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা দেখিয়েছিলেন। এবার জমা দেওয়া হলফনামায় তিনি নিজের নামে দেখিয়েছেন ১ একর ৯৮ শতক জমি। হলফনামায় তিনি এই জমির দাম দেখিয়েছেন ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
২০১৪ সালে ইয়াসিন আলীর নিজ নামে ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৮৩৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ ছিল। এবার সেটা বেড়ে হয়েছে ৮৬ লাখ ৯৭ হাজার ৫৪৭ টাকা। তাঁর অস্থাবর সম্পদ ২১ দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়েছে।
>গত পাঁচ বছরে ইয়াসিন আলীর আয় ১৬ শতাংশ এবং অস্থাবর সম্পদ প্রায় ২২ শতাংশ বেড়েছে।
২০১৪ সালে সাংসদ ইয়াসিনের ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ থাকলেও এবার তা কমে হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, এবার তাঁর নিজ নামে নগদ টাকা আছে ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৯ টাকা আর স্ত্রীর নামে ১০ লাখ ৭৩ হাজার ২৮২ টাকা। তাঁর নামে ব্যাংকে ৪ লাখ এবং স্ত্রীর নামে ৭ লাখ ১৭ হাজার ৩১২ টাকা আছে। ২০১৪ সালে নিজ নামে নগদ ছিল ১১ হাজার ৮২৪ আর স্ত্রীর নামে ৩০ হাজার টাকা।
পাঁচ বছর আগের হলফনামায় তিনি নিজ নামে ৫০ হাজার টাকা দামের একটি মোটরসাইকেল দেখিয়েছিলেন। এবার কোটি টাকা দামের একটি ল্যান্ডক্রুজার জিপের দাম মাত্র ৬০ লাখ টাকা দেখিয়েছেন। ২০১৪ সালে তাঁর এক ভরি স্বর্ণালংকার ছিল। এবার তা বেড়ে নিজ নামে ১০ ভরি ও স্ত্রীর নামে ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার হয়েছে।
২০১৪ সালের হলফনামায় তাঁর ৮৫ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ছিল। এবার নিজ নামে ৮০ হাজার ও স্ত্রীর নামে আরও ৭০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী দেখানো হয়েছে।
এই বিষয়ে সাংসদ ইয়াসিন আলী বলেন, ‘ট্যাক্স ফ্রি হওয়ায় আমি জিপ গাড়িটি কিনতে পেরেছি। সাংসদ হওয়ার পরও আমার আয় সেভাবে বাড়েনি, যা আছে, তা-ই এখানে উল্লেখ করা হয়েছে।’