রাঙামাটি থেকে নির্বাচিত সাংসদ ঊষাতন তালুকদার বলেছেন, সহনশীলতা ও পারস্পরিক আস্থাহীনতার কারণে সাধারণ ঘটনাও সহিংসতায় রূপ নেয়। যেকোনো সমস্যার উদ্ভব হলে স্থানীয়ভাবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। এভাবে সহিংসতা রোধ করা সম্ভব। গতকাল বৃহস্পতিবার শহরের কালিন্দীপুরে নিজস্ব কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা নিয়ে গত শনি ও রোববার রাঙামাটিতে সংঘটিত সহিংস ঘটনার বিষয়ে কথা বলেন ঊষাতন। আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ঊষাতন আরও বলেন, কিছু মানুষ আছে, যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। তারাই নানা গুজব ছড়িয়ে সহিংসতাকে উসকে দেয়। প্রশাসনের উচিত এসব লোকদের চিহ্নিত করা।
গত বুধবার বেলা ১১টায় ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়ার পর রাঙামাটি শহরের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। ২০-দলীয় জোটের হরতালেও শহরে যানবাহন চলাচল, অফিস-আদালত, শিক্ষা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক কাজকর্ম চলে।
সরকারের প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়ে জনসংহতি সমিতির এ সাংসদ বলেন, যেখানে প্রাথমিক শিক্ষা সমস্যায় জর্জরিত, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার মান নিম্ন, সেখানে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙালি কোনো সম্প্রদায়ের কাজে আসবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু রাঙামাটি নয়, সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামে আপাতত উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলছি। সরকারের উচিত পার্বত্য এলাকার মানুষের মতামতের প্রতি মূল্য দেওয়া।’ তিনি বলেন, ‘আমরাও উচ্চশিক্ষা চাই, তবে তার আগে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সেই উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার মতো যোগ্য করার ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
চুক্তি নিয়ে বাঙালি ও আদিবাসীদের মধ্যে সন্দেহ, অবিশ্বাস আছে বলে স্বীকার করে ঊষাতন বলেন, চুক্তিতে কী আছে, অনেকে তাও পড়ে দেখেননি। যে যা বলে তা-ই বিশ্বাস করেন। অথচ চুক্তি নিয়ে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে পারস্পরিক অসহিষ্ণুতা, আস্থাহীনতা ও অবিশ্বাস বাড়ছে।
সন্তু লারমা ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলন সম্পর্কে ঊষাতন বলেন, ‘অসহযোগ সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে নয়, সরকারের বিরুদ্ধে। আমরা ১৭ বছর অপেক্ষা করেছি। বলছি না যে এখনই চুক্তির সব ধারা বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকার কত বছরে বা কোন সময়ের মধ্যে চুক্তি বাস্তবায়ন করবে, তার একটা সময়সূচি নির্ধারণ করা হোক। আমরা আশা করছি, আমাদের অসহযোগ আন্দোলন শুরু হওয়ার আগেই সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের সময়সূচি ঘোষণা করবে।’