পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা প্রয়াত রামেন্দু শেখর (আর এস) দেওয়ানের মৃত্যুতে জুম্ম জাতি এক বিপ্লবীকে হারাল বলে মন্তব্য করেছেন জেএসএস নেতারা। গতকাল বুধবার এক ভার্চ্যুয়াল স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। তাঁরা আরও বলেন, জুম্ম জনগণের আন্দোলনে আর এস দেওয়ানের অবদান অসীম।
জেএসএসের আন্তর্জাতিক মুখপাত্র আর এস দেওয়ান গত ২৯ মার্চ যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে নিজ অ্যাপার্টমেন্টে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি ১৯৩২ সালের ১৭ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার খবংপয্যা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি রসায়নে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে উচ্চশিক্ষার জন্য ১৯৬৭ সালে যুক্তরাজ্যে যান। এরপর লন্ডনের কুইন্স এলিজাবেথ কলেজ থেকে এমফিল এবং ১৯৮০ সালে সালফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ১৯৭০-এর দশক থেকে জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনের পক্ষে প্রচার চালিয়ে যান।
আর এস দেওয়ানের স্মরণসভায় রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, তাঁর চেতনা ও আদর্শ তরুণ প্রজন্মের কাছে ক্রমাগত স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তাঁর আত্মনিবেদন করা ছিল সব সময় জনগণের জন্য। তিনি জুম্ম জনগণের জন্য আত্মবলিদান করে গেছেন। পাহাড়ি মানুষকে আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের জন্য তিনি ছিলেন ‘নেপথ্য নায়ক’।
অনুষ্ঠানে জেএসএসের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমার শোকবার্তা পাঠ করেন জেএসএসের তথ্য ও প্রচার বিভাগের সদস্য দীপায়ন খীসা। শোকবার্তায় সন্তু লারমা বলেন, আর এস দেওয়ানের মৃত্যুতে জুম্ম জাতি হারাল এক বিপ্লবী সন্তানকে। আর দল হারাল এক আদর্শবান ও নিঃস্বার্থ বন্ধুকে। তিনি ছিলেন একজন নিখাদ দেশপ্রেমিক, মানবাধিকার সুরক্ষাকর্মী ও দৃঢ়চেতা সংগ্রামী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, মানবাধিকারের আন্দোলন বিশ্বজনীন সংগ্রাম। সেই সংগ্রামে আর এস দেওয়ান অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি আসলে সব জাতির জন্য বাংলাদেশকে বাসযোগ্য করতে চেয়েছিলেন। সবার জন্য সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছিলেন। দীর্ঘদিন বিদেশে থেকেও তাঁর মনটা যে দেশে পড়ে ছিল, তা তাঁর কাজ থেকে বোঝা যায়।