রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভূঁইয়ার স্ত্রী দিলশান আরা (অপর্ণা) রাষ্ট্রচিন্তা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তাঁর স্বামী কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন না। ইফতারের ঠিক আগমুহূর্তে দ্রুততার সঙ্গে র্যাব পরিচয় দিয়ে একদল লোক তাঁকে তুলে নিয়ে গেছে।
দিলশান আরা বলেন, ‘আমার একটাই প্রশ্ন, ও ক্রিমিনাল না, ইফতার করতে না দিয়ে কেন নিয়ে যাওয়া হলো? ওর সঙ্গে আমরাও দুই দিনের রোজায় আছি।’ তিনি আরও বলেন, ইফতারের কিছু আগে র্যাব পরিচয় দিয়ে একদল লোক দুটো মাইক্রোবাসে করে আসে। তারা কিছু বলতেই দেয়নি। এসেই সব সরঞ্জাম নিয়ে যায়। পরে বলে, কথাবার্তা বলে ছেড়ে দেওয়া হবে।
গতকাল মঙ্গলবার উত্তর বাড্ডার বাসা থেকে দিদারুল ভূঁইয়াকে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাষ্ট্রচিন্তা মনে করে, দিদারুল ভূঁইয়াসহ আরও বেশ কয়েকজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া ‘ভয়াবহ’ পরিস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। জনগণের অর্থে চলা জনগণের বাহিনীকে তাদেরই বিরুদ্ধে ব্যবহারের ফল শুভ হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ূম বলেন, ঘটনার পরপর রাষ্ট্রচিন্তা র্যাব-৩–এ যায়। সেখান থেকে বলা হয়, দিদারুল র্যাব-১–এ আছেন। সেখানে যোগাযোগের পরও র্যাবের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
হাসনাত কাইয়ূম বলেন, পরিবারের সদস্যরা রাতেই বাড্ডা থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে যান। সেখাওে তাঁরা পুলিশি অসহযোগিতার মুখে পড়েন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ যেভাবে বলে, সেভাবে তাঁরা ঘটনার বিবরণ লিখতে বাধ্য হন। তাঁরা লেখেন দিদারুল বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি।
বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দিদারুল এমন কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন না, যা অপরাধ বলে গণ্য হতে পারে বলেও দাবি করেন হাসনাত কাইয়ূম।
লিখিত বক্তব্যে রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য রাখাল রাহা বলেন, দিদারুল ভূইয়া কুড়িগ্রাম, দিনাজপুরে ত্রাণের বিষয়ে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। ওই পোস্ট বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার হয়। পরে কয়েকটি গ্রুপ থেকে ওই পোস্টগুলো মুছে ফেলা হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সে কারণেই তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দিদারুলকে।
কয়েকজনকে তুলে নেওয়ার পর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
গতকাল মঙ্গলবার লালমাটিয়া থেকে বাংলাদেশে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে কুমির উপাদনকারী মোস্তাক আহমেদকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন তাঁর স্ত্রী লিপা আক্তার।
লিপা প্রথম আলোকে বলেন, লালমাটিয়ার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর আজ সকালে রমনা থানা থেকে একটি ফোন আসে। তাঁকে থানায় যাওয়ার কথা বলা হয়।
জানা গেছে, রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই তালিকায় কাটুর্নিস্ট আহমেদ কবীর (কিশোর) রয়েছেন। কিশোর নামে ফেসবুক পেজে তিনি করোনাভাইরাস মহামারির নিয়ে বেশ কিছু কার্টুন এঁকেছেন এবং শেয়ার করেছেন।
এ নিয়ে গতরাতে র্যাব-৩–এর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।