যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খান রানার জামিন আরও এক সপ্তাহ স্থগিতই থাকছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ জামিনের মেয়াদ ৮ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছেন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলে ৮ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছেন। এ কারণে আমানুরের জামিন স্থগিত থাকছে এবং তিনি কারামুক্তি পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
এর আগে গত ১৯ জুন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ ওই মামলায় আমানুরের জামিন মঞ্জুর করে রায় দেন। এই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করেন, যা পরদিন শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি আমানুরকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন ১ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেন। একই সঙ্গে ১ জুলাই জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার শুনানি হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ। অন্যদিকে, আমানুরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন মুনসুরুল হক চৌধুরী ও এম আতাউল গনি।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ওই মামলায় আমানুরের জামিন স্থগিতের মেয়াদ আগামী সোমবার পর্যন্ত বাড়িয়েছেন আপিল বিভাগ। এতে আমানুর মুক্তি পাচ্ছেন না। এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছে। আদালত সোমবার পরবর্তী শুনানির জন্য দিন রেখেছেন।
টাঙ্গাইল সদরের বাঘিলের যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই টাঙ্গাইল শহরে এসে নিখোঁজ হন। মামুনের বাবা এক বছর পর আদালতে হত্যা মামলা করেন। এই মামলার তিন আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়ে বলেন, সাংসদ আমানুরের নির্দেশনায় যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ওই দুজনের লাশ পাওয়া যায়নি। তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় গত বছরের ৩ মে আমানুরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি খুন হন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ। ওই হত্যা মামলায় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তার হন সাংসদ আমানুর। এই মামলায় আমানুর ছাড়াও তাঁর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খানসহ ১৪ জন আসামি রয়েছেন। তাঁর বাকি তিন ভাই পলাতক।