বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় তাঁর রুমমেট মিজানুর রহমানকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত আজ বুধবার এই আদেশ দেন।
এর আগে পুলিশ আসামি মিজানুর রহমানকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়, আবরার ফাহাদ এর রুমমেট ছিলেন মিজানুর রহমান। আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অন্য আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি মিজানুর রহমানের নাম উঠেছে। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য এই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
অপরদিকে, আদালতে মিজানুর রহমানের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালত মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চান, ‘আপনার কিছু বলার আছে কি না? আবরার কী আপনার রুমমেট ছিলেন?’ জবাবে মিজানুর রহমান আদালতকে বলেন, ‘জি স্যার, আবরার আমার রুমমেট ছিল।’ উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে মিজানুর রহমানকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত।
এর আগে গত ১০ অক্টোবর মিজানুর রহমানকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অসুস্থ থাকায় তখন মিজানুর রহমানকে রিমান্ডে নেওয়ার কোনো আবেদন করেনি পুলিশ। আদালত মিজানকে তখন কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গতকাল আবরার হত্যা মামলায় বুয়েটের ছাত্র এস এম নাজমুস সাদাত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, সাদাত আদালতকে বলেন, আবরারকে তাঁর কক্ষ থেকে ২০১১ নম্বরে ডেকে আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন বুয়েটের ১৬ তম ব্যাচের মনিরুজ্জামান মনির। কক্ষে আসার পর ১৫ ও ১৬ তম ব্যাচের ছাত্র ও বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ ওরফে সকাল, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ ও মনিরুজ্জামান মনির ক্রিকেটের স্টাম্প ও মোটা রশি দিয়ে বেধড়ক পেটান আবরারকে।
আবরার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ২০ জনের মধ্যে আটজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা হলেন অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ, মেহেদী হাসান ওরফে রবিন, মেফতাহুল ইসলাম, মুজাহিদুল, মনিরুজ্জামান মনির, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম ও এস এম নাজমুস সাদাত। আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলায় ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন আবরার। ৬ অক্টোবর রাত আটটার দিকে তাঁকে কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় মামলা করেন।