একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়পুরহাট–১ (সদর ও পাঁচবিবি) আসনে আপিল বিভাগের রায়ে বিএনপি প্রার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে। এ আসনে বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্টের আর কোনো প্রার্থী থাকল না। এ কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সামছুল আলমের বিজয় অনেকটা নিশ্চিত মনে করছেন দলীয় নেতা–কর্মীরা।
জেলা বিএনপি ও জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট আবেদনে এ আসনের বিএনপির প্রার্থী ফজলুর রহমানের প্রার্থিতা স্থগিত করেন হাইকোর্ট। ফজলুর রহমান ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া ওই রায় গতকাল সোমবার বহাল রাখেন। এর মধ্য দিয়ে বিএনপির প্রার্থী ফজলুর রহমানের নির্বাচন করার আর কোনো আইনগত বৈধতা থাকল না। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলীয় প্রার্থী সামছুল আলম বিএনপির প্রার্থী ফজলুর রহমানের প্রার্থিতার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রিটের রায়ের ফলাফলে ফজলুর রহমান প্রার্থিতার পদ হারালেন। এ আসনে ঐক্যফ্রন্টেরও কোনো প্রার্থী নেই।
গতকাল দুপুরে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ফজলুর রহমান ঢাকা থেকে বলেন, তাঁর আপিল মামলাটি গতকাল চেম্বার বিচারপতির আদালতে শুনানি হয়েছে। আদালত হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন। তাঁর নির্বাচন করার আর সুযোগ কোনো থাকল না।
এ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপি তিন নেতাকে প্রার্থী হিসেবে চিঠি দেয়। তাঁরা হলেন ফজলুর রহমান, মমতাজ উদ্দীন মণ্ডল ও ফয়সল আলীম। পরে ফজলুর রহমান চূড়ান্ত দলীয় মনোনয়ন পান। তিনি জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে ২৭ নভেম্বর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। তিনি ২৮ নভেম্বর দলীয় প্রার্থী হিসেবে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ২ ডিসেম্বর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, বিএনপির প্রার্থী ফজলুর রহমানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রণালয়ে গৃহীত না হওয়ায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। ফজলুর রহমান রিটার্নিং কর্মকর্তার ওই আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান। এরপর দল থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনী প্রচারে নামেন।
জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, এ আসনে তাঁদের আর কোনো প্রার্থী থাকলেন না। এতে নেতা–কর্মীরা মর্মাহত।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম সোলায়মান আলী বলেন, বিএনপির প্রার্থী এখন না থাকলেও অন্যান্য দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন। এ কারণে নির্বাচনকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। তাঁরা নির্বাচনী প্রচার জোরেশোরে চালাচ্ছেন। তবে তিনি আশাবাদী, দলীয় প্রার্থী জয় লাভ করবেন।
১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এ জেলার দুইটি আসনেই বিএনপির সাংসদ বিজয়ী হন। ২০১৪ সালের ‘একতরফা’ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সামছুল আলম জয়পুরহাট–১ আসনে সংসদ সদস্য হন।