জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের

আপনাদের কে ডেকেছে সংলাপে: কাদের

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এখন বড় গলায় কথা বলছেন। এই নির্বাচনে অংশ নেব না, সংলাপেও যাব না। আপনাদের কে ডেকেছে সংলাপে? শেখ হাসিনা গতবার সংলাপ ডেকেছিলেন, সেটার আপনারা কী জবাবটা দিয়েছেন? সেই সংলাপের পর আপনাদের ভূমিকা কী ছিল? আপনাদের কেউ সংলাপে ডাকছে না। নিজেরাই আগ বাড়িয়ে সংলাপের কথা বললেন।’

ওবায়দুল কাদের আজ বুধবার জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। শুধু তা-ই নয়, কোনো আলোচনায়ও বিএনপি যাবে না। একমাত্র নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে, তখন আলোচনা হতে পারে। তার আগে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।

সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, সেটা তাদের ব্যাপার। সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে। সময় ও স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। নির্বাচন কারও জন্য অপেক্ষা করবে না। বিএনপি নির্বাচনে এল কি এল না, তা দেখার বিষয় নয়।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেব আপনাকে পরিষ্কার বলে দিতে চাই, যতই হাঁকডাক করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিন্তু উচ্চ আদালতের আদেশে জাদুঘরে চলে গেছে। জাদুঘর থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর ফিরে আসবে না। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, ঠিক সেভাবে বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে।’

জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি পুনর্বাসিত করেছেন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মুক্তিযোদ্ধার দল নয়, মুখোশধারী মুক্তিযোদ্ধার দল। এটা গণতান্ত্রিক দল নয়, বর্ণচোরা গণতান্ত্রিক দল। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিশ্বস্ত, নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। এখন দেশের ১ নম্বর শত্রু হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। আর এই সাম্প্রদায়িকতার চারা জিয়াউর রহমান রোপণ করেছিলেন। সেই বিষবৃক্ষ এখন ডালপালা ছড়াচ্ছে।

আমাদের অভিভাবকশূন্য করতে বঙ্গবন্ধুকে আর নেতৃত্বশূন্য করতে জাতীয় চার নেতাকে জেলখানার ভেতরে হত্যা করা হয়েছিল জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘খুনিদের পুরস্কৃত, পুনর্বাসন করেছিলেন সেনাপতি জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না, এই অধ্যাদেশের বৈধতা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।’

১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড আর জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের মাস্টারমাইন্ড জিয়াউর রহমান জানিয়ে তিনি বলেন, খুনিদের মতো একই অপরাধে তিনি অপরাধী। তিনি যদি হত্যাকারী না–ই হবেন, তাহলে এই হত্যার বিচার হবে না—এই আইনকে কেন বৈধতা দিলেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন আবদুর রাজ্জাক, হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন, মৃণাল কান্তি দাস, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বীর বিক্রম প্রমুখ।

সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতারাসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।