আতিকুলের সমাবেশে কাউন্সিলর ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ

ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের সমাবেশে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি। ছবি: সাজিদ হোসেন
ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের সমাবেশে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি। ছবি: সাজিদ হোসেন

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলামের সমাবেশে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ঢাকা উত্তরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মো. নাসির ও দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী মো. জাহিদুর রহমানের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সমাবেশস্থলের চেয়ার ভাঙচুর হয়।

আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে গুলশানের শহীদ ফজলে রাব্বি পার্কের ভেতরে আয়োজিত আতিকুল ইসলামের নির্বাচনী গণসংযোগ ও প্রচার কাজের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

গত ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ–সমর্থিত কাউন্সিলর পদে প্রার্থী ঘোষণার দিন ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুর রহমানকে সমর্থন দেওয়া হয়েছিল। এরপর এ ওয়ার্ডে তাঁকে বাদ দিয়ে সমর্থন দেওয়া হয় বর্তমান কাউন্সিলর মো. নাসিরকে।

ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাব্বি পার্কের ভেতরে আতিকুল ইসলামের সমাবেশ চলছিল। এ সময় সেখানে মো. জাহিদুর রহমান ওরফে দুলাল তাঁর কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে আসেন। এরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ–সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো. নাছিরের কর্মী-সমর্থক ও জাহিদুর রহমানের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয় শুরু হয়। এ সময় গাছের নিচে তৈরি মঞ্চে কথা বলছিলেন মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম। মঞ্চে তাঁর ভাই মাইনুল ইসলাম, তিন বোন আমেনা, হালিমা, রহিমা, আতিকুলের স্ত্রী শায়লা সাগুফতা, মেয়ে বুশরা আফরীন, বোনের স্বামী ও সন্তানের উপস্থিত ছিলেন।

এখানে আতিকুল ইসলাম বলেন, আগামী ১ তারিখ সবাই যেন ভোটকেন্দ্রে যান। ভোট দেন। নির্বাচনে হার-জিত থাকবে। যে–ই জিতুক বা হারুক, সবাই মিলে সমন্বিতভাবে কাজ করবে বলে তিনি আশা করেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আ. লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলামের সমাবেশে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের পর ভাঙা চেয়ার। ছবি: নাসরিন আকতার

আতিকুলের বক্তব্য শেষে সমাবেশের উত্তেজনার একপর্যায়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা চলে যান।

এরপর আতিকুল ইসলাম মঞ্চ থেকে সরে যাওয়ার পর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারামারি, ধাক্কাধাক্কি এবং চেয়ার দিয়ে পেটানোর ঘটনাও ঘটে। পার্কের পশ্চিম কোণে আতিকুল ইসলামসহ মো. নাসিরের কর্মী-সমর্থকেরা পার্ক থেকে বের হয়ে গণসংযোগে যান।

আতিকুল ইসলাম মহাখালী দক্ষিণপাড়া সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে সামনে যান। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পার্কের ভেতর কাউন্সিলরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।’

গুলশানের শহীদ ফজলে রাব্বি পার্কের ভেতরে আয়োজিত নির্বাচনী সমাবেশে আ. লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম। ছবি: নাসরিন আকতার

নির্বাচনী প্রচারের একদিন বাকি থাকতে আজ কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ভোটের দিন কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন আতিকুল।

কাউন্সিলরদের মধ্যে সংঘর্ষ, নিজেদের মধ্যে অনৈক্য কি না—এ বিষয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, পরিবারে ভাই ভাই বা বোনের মধ্যেও তর্কবিতর্ক হয়। এটি ঠিক হয়ে যাবে।

আজ গুলশান শহীদ ফজলে রাব্বি পার্ক থেকে প্রচার শুরু করে মহাখালী সাততলা বস্তি এলাকা, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল এলাকায় গণসংযোগ করেন আতিকুল ইসলাম।