একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আদালতের রায়ে যে আট আসনে বিএনপির প্রার্থী বাদ পড়ে গেছেন, সেসব আসনে পুনঃ তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছে দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান নির্বাচন কমিশনে সাক্ষাৎ শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি যে নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশন বৈধতা দেওয়ার পর আদালত তা বাতিল করছেন। আমরা একজন প্রার্থীকে তো নির্বাচনী এলাকায় পরিচয় করিয়েছি। এখন এসে আমাদের প্রার্থী বাতিল করা হলো। নির্বাচন কমিশন বৈধ ঘোষণার পর আদালত অবৈধ ঘোষণা করায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। ইসির ভুলে আমরা কেন শাস্তি পাব!’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই অবস্থায় আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে দুটি প্রস্তাব করেছি। প্রথমত, আমাদের যে আটটি আসনে আদালতের রায়ে প্রার্থীশূন্য হয়ে গেছে, সেসব আসনে পুনঃ তফসিল দেওয়া হোক অথবা আমাদের অন্য যে বৈধ প্রার্থী ছিলেন, তাঁদের মধ্য থেকে প্রার্থিতা দেওয়া হোক। নির্বাচন কমিশন আমাদের বক্তব্য শুনে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে বিএনপির যেসব প্রার্থী বৈধ হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত আটটি আসনের আটজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছেন আদালত। বিএনপির প্রার্থীশূন্য আসনগুলোর মধ্যে আছে জামালপুর-৪, বগুড়া-৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪, রংপুর-১, ময়মনসিংহ-৮, ঝিনাইদহ-২, জয়পুরহাট-১ ও রাজশাহী-৬।
ব্যালট পেপার প্রস্তুত করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আইন অনুযায়ী গুজব ছড়ালে শাস্তি হয়। এখন প্রধানমন্ত্রী গুজব ছড়ালে শাস্তি হয় কি না, জানি না। কেননা, ব্যালট পেপার ছাপানোর যে ব্যবস্থাপনা থাকা দরকার, তা সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে। কাজেই বিএনপির ব্যালট পেপার ছাপানোর বিষয়টি গুজব।’
বিএনপি-জামায়াতের কাছ থেকে টাকা নিন, নৌকায় ভোট দিন—প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে টাকা নেওয়ার কথা বলেন, এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন।
সর্বকালের সেরা নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির এই নেতা বলেন, এখনো নির্বাচন শেষ হয়নি। কাজেই ভবিষ্যতে যেটা হবে, তা নিয়ে তো এখনই বলা যায় না। মাহবুব উদ্দীন খোকনকে পুলিশ নিজেই গুলি করেছে, কাজেই সেরা পরিবেশ কীভাবে বলা যায়!
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এবং নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।