আকাশে রোদ আর তীব্র গরমের পরেই কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে চারদিক। কিছুক্ষণ পর দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি। কোথাও কোথাও বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টিও পড়তে দেখা গেছে। গতকাল সোমবার এমনই ছিল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের আবহাওয়ার পরিস্থিতি। এদিন বজ্রপাতে ফেনী ও ভোলায় দুজন মারা গেছেন। ঝড়ে ঘর চাপা পড়ে মারা গেছেন একজন। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, আজ মঙ্গলবারও দেশের অনেক জায়গায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টি অথবা শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
ঢাকায় গতকাল সকালের দিকে এক দফা বৃষ্টি হয়। এরপর বেলা বাড়তেই রোদ ও গরম উঁকি দেয়। কিন্তু সেটাও স্থায়ী ছিল না। বেলা তিনটার দিকে হঠাৎ আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়। ফাঁকে ফাঁকে রোদও ছিল। এ সময় দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিও ছিল। বৃষ্টির পানিতে রাজধানীর খিলগাঁও, বসুন্ধরা, কাজীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়ে নগরবাসী।
গতকাল ঢাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার, যা অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে বয়ে গেছে। সারা দিনে ঢাকায় ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় শিলাবৃষ্টি পড়তে দেখা গেছে। গতকাল ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, সিলেট, চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ী, দমকা, ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর সঙ্গে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।
এই মাসের শুরু থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অংশে কালবৈশাখী আঘাত হানে। ৩১ মার্চ ও ১ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখীতে ৯ জন মারা যান।
গতকাল দেশের উত্তরাঞ্চলে বজ্রসহ বৃষ্টি হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ৭২ মিলিমিটার, পটুয়াখালীতে ১০ মিলিমিটার, সিলেটের শ্রীমঙ্গলে ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাজশাহীতে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। আগামী তিন দিনে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত কমে আসতে পারে। তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
গতকাল ফেনী ও ভোলায় বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ফেনী প্রতিনিধি জানান, ফেনীর সোনাগাজীতে দুপুরে ফেনী নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে রঞ্জন জলদাস (১৯) নামের এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বাড়ি সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নে। ভোলা প্রতিনিধি জানান, চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. জসিম উদ্দিন (২৫) গতকাল দুপুরে ইটভাটায় কাজ করার সময় বজ্রপাতে মারা যান। এ ছাড়া ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নে ঝড়ে ঘর চাপা পড়ে আয়শা নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।