দেশের প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে পর্যায়ক্রমে ১০ শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) স্থাপনের পরিকল্পনা সরকারের আছে। কিন্তু এতসংখ্যক আইসিইউ পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত দক্ষ জনবলের সংকট থাকায়, তা বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন। এ বিষয়ে কার্যক্রম চলমান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হাইকোর্টে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য রয়েছে। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ সোমবার প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) মো. ফরিদ হোসেন মিঞা স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইতিমধ্যে দেশের যেসব জেলা সদরে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপিত হয়েছে, সেগুলোতে ১০ শয্যার বেশি আইসিইউ কার্যকর আছে। এক রিটের ধারাবাহিকতায় আদালতের আদেশ অনুসারে আজ আদালতে ওই প্রতিবেদন উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী বশির আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শাহ নেওয়াজ।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় প্রথম আলোকে বলেন, গত ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি (ইউজার ফি) নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতে বলেছিলেন। আইসিইউ শয্যা স্থাপন বিষয়েও অগ্রগতি জানাতে বলা হয়েছিল। এ অনুসারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আদালতের ইতিপূর্বে দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অক্সিজেন ব্যবহারের মূল্য ও কোভিড-১৯–সম্পর্কিত কিছু প্রয়োজনীয় পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। অক্সিজেন ব্যবহারের মূল্যসহ কোভিড-১৯–সম্পর্কিত ১০টি জরুরি পরীক্ষার মূল্যতালিকা বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মালিকদের অবিলম্বে কার্যকর করাসহ তালিকা প্রতিষ্ঠানের দৃশ্যমান স্থানে টাঙাতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ‘দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অধ্যাদেশ-১৯৮২’ যথাযথভাবে অনুসরণের নির্দেশনা চেয়ে হিউম্যান রাইটস ল’ইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষে সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম ২০১৮ সালের জুনে হাইকোর্টে রিট করেন।
এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৪ জুলাই হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। এরপর হাইকোর্ট বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি (ইউজার ফি) নির্ধারণ এবং ওই অধ্যাদেশের বিধান যুগোপযোগী করে নতুন আইন প্রণয়নের অগ্রগতি জানাতে বলেন। এর ধারাবাহিকতায় ওই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।