ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে বামপন্থী ৯টি ছাত্রসংগঠনের ডাকা আইন মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশি বাধার কারণে মন্ত্রণালয়ের সামনে যেতে পারেনি৷ বাধার পর পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে সমাবেশ করে একই দাবিতে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাম সংগঠনগুলো৷
সাত ছাত্রনেতার নামে দায়ের করা ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হওয়া শ্রমিকনেতা রুহুল আমিনসহ সবার মুক্তি এবং রাষ্ট্রীয় হেফাজতে লেখক মুশতাকের মৃত্যু ও কার্টুনিস্ট কিশোরের নির্যাতনের বিচারের দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে মিছিল বের করেন ৯টি বাম ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা৷
দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে সচিবালয়ের মোড়ে পৌঁছায়৷ সেখানে আগে থেকে ব্যারিকেড দিয়ে অবস্থানে ছিল পুলিশ৷ বাম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা ব্যারিকেড ভেঙে প্রবেশের চেষ্টা করলেও বিপুলসংখ্যক পুলিশের বাধার মুখে আর সামনে এগোতে পারেনি৷ পরে সেখানেই শুরু হয় বিক্ষোভ সমাবেশ৷
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ‘ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠী নিজেদের নিরাপত্তায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন দমনের জন্য অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট করেছিল৷ সেই আইনের সন্নিবেশন আজকে আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি৷ তার মানে, বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর মনোজগৎকেই ধারণ করে৷ এটিই এই আইন বাতিলের পক্ষে কারণ হিসেবে যথেষ্ট৷ গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় এসেছে, তাদের কাজ আগের সরকারের সমস্ত পাপ স্মৃতি থেকে মুছে ফেলা৷ সরকারগুলো এমন পাপাচারে লিপ্ত হচ্ছে যে আমরা আগের সরকারের পাপাচার ও জুলুমগুলো ভুলে যাচ্ছি৷’
এই সমাবেশে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (বাসদ) কেন্দ্রীয় সভাপতি আল কাদেরী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে বর্তমান সরকার যা করছে, তা সম্পূর্ণ অবৈধ ও সংবিধানবিরোধী৷ লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর পর তা নিয়ে কোনো জবাবদিহি এই সরকার করেনি৷ এই কর্মসূচির পর আমরা আরও বৃহত্তর আন্দোলন-কর্মসূচি করব৷’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানার সভাপতিত্বে ও ছাত্র ফেডারেশনের (মুক্তি কাউন্সিল) কেন্দ্রীয় সভাপতি মিতু সরকারের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়, ছাত্র ফেডারেশনের (গণসংহতি আন্দোলন) কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দীন, ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মোমিন বক্তব্য দেন৷ মাসুদ রানার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়৷