অস্ত্র আইনের মামলায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবকে আবার চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এই আদেশ দেন।
তারেকুজ্জামান রাজীবকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছিল র্যাব-২।
আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে র্যাব বলেছে, তারেকুজ্জামান রাজীবের কাছে পাওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের বৈধ কোনো কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি। তারেকুজ্জামান রাজীব খুব চালাক প্রকৃতির লোক। তিনি রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে অবৈধ প্রভাব খাঁটিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, আসামি তারেকুজ্জামান রাজীব ঢাকার মোহাম্মদপুর থানা এলাকাসহ মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র, গুলি ও মাদকের ব্যবসা করে আসছিলেন। পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখলদারির মাধ্যমে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার অপরাধ জগতের সুলতান হিসেবে আবির্ভূত হন তিনি।
আবার কেন তারেকুজ্জামান রাজীবকে রিমান্ডে নেওয়া দরকার, এ ব্যাপারে আদালতকে র্যাব বলেছে, তাঁর সহযোগী অন্যান্য ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত করার জন্য তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। অস্ত্র ও গুলির উৎস সম্পর্কে জানার জন্য তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
তারেকুজ্জামান রাজীবের আইনজীবীরা আদালতের কাছে দাবি করেন, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে তাঁকে (তারেকুজ্জামান রাজীব) হয়রানি করা হচ্ছে। কোনো আলামত উদ্ধার হয়নি। তারেকুজ্জামান রাজীব অসুস্থ। তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবকে আবার চার দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন।
মামলাটি তদন্ত করছেন র্যাব-২-এর উপপরিদর্শক (এসআই) প্রণয় কুমার প্রামাণিক।
এর আগে গত ২১ অক্টোবর অস্ত্র ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তারেকুজ্জামান রাজীবকে সাত দিন করে মোট ১৪ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত। এরপর তারেকুজ্জামান রাজীবকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার তদন্তভার পায় র্যাব। এখন এই মামলায় তারেকুজ্জামান রাজীবকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেল র্যাব।
গত ২০ অক্টোবর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর এলাকায় বাড়ি ও জমি দখলসহ নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে।
তারেকুজ্জামান রাজীব ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তিনি মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। এক মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে আবার ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন তিনি। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আরও পড়ুন:
কাউন্সিলর হয়ে বদলে যান রাজীব