নাতি–নাতনিদের জিম্মায় নিতে আদালতে আবেদন করতে গিয়েছিলেন মাহমুদা খানমের (মিতু) বাবা মোশাররফ হোসেন। লকডাউনের কারণে আদালত বন্ধ থাকায় ফিরে এসেছেন তিনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই তাঁরা পারিবারিক আদালতে যাবেন।
বাবুল আক্তারের পরিবারের পক্ষ থেকেও বাবুল–মিতুর সন্তানদের জিম্মায় রাখার চেষ্টা রয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও বাবুল আক্তারের পরিবার এ কথা স্বীকার করছে না।
প্রথম আলোর মাগুরা প্রতিনিধি সকালে বাবুল আক্তারের ভাই মো. হাসিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, বাবুল–মিতুর সন্তানদের পেতে তাঁরা আদালতে যাননি। তবে তারা এখনো তাঁদের জিম্মায় আছে। তারা কোথায় আছে, সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে চাননি।
গত সোমবার বাবুল আক্তারকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রামে ডেকে পাঠায়। ওই দিনই বাবুল আক্তারের বর্তমান স্ত্রী বাবুল–মিতুর দুই সন্তানকে নিয়ে তাঁদের বাবর রোডের বাসা ছেড়ে যান বলে জানা গেছে। বাবুল আক্তারের বর্তমান স্ত্রীর বাড়ি কুমিল্লায় বলে জেনেছে পুলিশ ও মিতুর পরিবার। মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বাবুল–মিতুর সন্তানদের নিয়ে বাবুলের বর্তমান স্ত্রী কুমিল্লায় চলে গেছেন বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। মিতুর সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে তাঁরা শঙ্কিত। দ্রুত নাতি–নাতনির অভিভাবকত্ব চান তাঁরা।
উল্লেখ্য, সন্তানদের আড়ালে রাখতে বাবুল প্রথমে পুলিশকে ভুল ঠিকানা দিয়েছিলেন বলেও পিবিআই কর্মকর্তাদের জানান। পিবিআই জানায়, বাবুল আক্তারের রিমান্ড শেষে বাবুল–মিতুর ছেলের সঙ্গে তারা কথা বলবে। কারণ ওই ছেলেই হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী।
পুলিশের যেসব কর্মকর্তা মিতু হত্যাকাণ্ডের খোঁজখবর রাখছেন, তাঁরা জানান, এই মামলায় যাঁদের নাম আসবে, তাঁদের সবার সঙ্গেই কথা বলতে চান তাঁরা। এই মামলার অপর আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসার স্ত্রী পান্না আক্তারের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলবেন। তদন্ত শুরুর পর পিবিআই একদফা পান্নার সঙ্গে কথা বলেন। পিবিআই কর্মকর্তারা বলেন, বাবুল আক্তার পুলিশ হেফাজতে থাকায় এখন অনেকেই কথা বলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজ রোববার পিবিআইর উপমহাপরিদর্শক বনজ কুমার মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, দেশে থাকলে মুসা গ্রেপ্তার হবেন।
এখন পর্যন্ত এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি মুসার কোনো খোঁজ নেই। মিতু হত্যার তিন সপ্তাহ পর থেকে তিনি নিখোঁজ। মুসা ছাড়া এই মামলার সন্দেহভাজন দুই আসামি নুরুন্নবী ও রাশেদ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন সন্তানকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে মিতুকে। ওই সময় বাবুল আক্তার ঢাকায় ছিলেন। চট্টগ্রামে ফিরে গিয়ে বাবুল আক্তার বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডে জঙ্গিদের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে, এমন কথাও উল্লেখ করেন তিনি। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ওই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। পরে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় প্রধান সন্দেহভাজন বাবুল আক্তার।