করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে প্রায় তিন মাস বন্ধ আছে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইন ক্লাস শুরু করার জন্য পরামর্শ দিয়ে আসছে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার মধ্যেও এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ক্লাস-পরীক্ষা নিতে অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) জানায়, ‘অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়ার সক্ষমতা অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরই রয়েছে।’
ইউজিসি সূত্রে আরও জানা গেছে, ‘করোনাভাইরাসের প্রকোপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ ছুটিতে থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে দেশের ৬৩টি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে ৫৬টি বেসরকারি ও বাকি ৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। অনলাইনে ক্লাস নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ। অনলাইনে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অংশ নেওয়ার হার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বেশি।’
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের হার যে কম, তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বেশ কিছু বিভাগের অনলাইন জরিপের ফলাফল থেকে আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একেবারে সুনির্দিষ্ট করে বললে কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের প্রায় ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন। কারণ হিসেবে তাঁরা স্মার্টফোন না থাকা, গ্রামাঞ্চলের ধীরগতির ইন্টারনেট–সেবা ও করোনার কারণে মানসিক দুশ্চিন্তা ও সাময়িক আর্থিক অসচ্ছলতার কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এ কথাও সত্য যে শিক্ষার্থীরা তাঁদের শিক্ষাজীবন নিয়ে একই সঙ্গে শঙ্কিত এবং তারা নিজেরাও বুঝতে পারছেন যে করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাসের কোনো বিকল্প নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগ ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র যে প্রায় কাছাকাছি, এ থেকে ধারণা করা অস্বাভাবিক নয়।
উল্লেখ্য, অনলাইন ক্লাস বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পরামর্শের প্রথম ডাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, শিক্ষার্থীদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে না। তার কারণ সবার জানা। আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশের সামাজিক বাস্তবতা আর উন্নত বিশ্বের সামাজিক বাস্তবতা ভিন্ন। আমাদের দেশে অনলাইন ক্লাস পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত ডিজিটাল অবকাঠামো এখনো তৈরি হয়নি। আকাঙ্ক্ষার ফোরজি নেটওয়ার্ক মূলত বাস্তবতার টুজি নেটওয়ার্কের একটু বেশি। বিশেষত যথাক্রম যখন বড় শহর থেকে গ্রাম। তার ওপর ফোন কোম্পানিগুলোর নতুন করে বিমূর্ত অফিস-আদালত ও শিক্ষাপাড়ার চাপ হুট করে সামলে নেওয়াও সম্ভব নয়। তবে এ কথাও সত্য, গত এক দশকে বাংলাদেশের ডিজিটাল উন্নয়ন আগের চেয়ে এগিয়ে গেছে বহু ধাপ। তবে এমন একটি মহামারির জন্য সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও প্রস্তুত ছিল না। একটি প্রায় অ্যানালগ জীবনযাত্রাকে ডিজিটাল অবকাঠামোর মাধ্যমে অনলাইন জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত করতে সময় লাগা অস্বাভাবিক নয়। এর পাশাপাশি সারা বিশ্ব যেখানে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন, সেখানে তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে আমাদের আর্থসামাজিক বাস্তবতা নতুন করে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। এই বাস্তবতায় শিক্ষাক্ষেত্রে একটি আমূল পরিবর্তন আর্থিকভাবে কতখানি বহনযোগ্য, তা শঙ্কার দাবি রাখে।
আপামর সাধারণ জনগণের অসাধারণ মেধাবী সন্তানদের শিক্ষার বাতিঘর হলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যখন অনলাইন মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনা শুরু করে, তখন দেশের শীর্ষতম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হয়। তেমনটি ভেবেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৪০ লাখের বেশি শিক্ষার্থীকে ঘরে বসেই শিক্ষা গ্রহণের সুবিধা করতে ‘ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান ল্যাপটপ, ওয়ান ড্রিম’ কর্মসূচি এবং সাশ্রয়ী ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়ার জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া গ্রাম পর্যায়ে ইন্টারনেট নিয়ে যেতে ইডিসি প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। কেবল সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ও নিজেদের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসে যোগদানের ক্ষেত্রে কী ধরনের চাহিদা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা জরিপ করছেন। কিন্তু সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কারও পক্ষেই এই বিষয়ের আশু সমাধান দেওয়া সম্ভব নয়। এটি অবশ্যই একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। কিন্তু লাখো শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎকে এভাবে স্থবির করে রাখা যায় না। আর সে কারণেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের ‘সীমিত সামর্থ্য’ দিয়েই অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে অনুরোধ জানিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫ জুন অনলাইন ভার্চ্যুয়াল মিটিং প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম পরিচালনার অগ্রগতি পর্যালোচনা শীর্ষক সভায় সে অনুরোধ করা হয়। এ সভায় ১ থেকে ৭ জুলাইয়ের মধ্যে ঢাবির সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের প্রতি ‘সীমিত সামর্থ্য’ দিয়েই অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার কথা ঘোষণা দেওয়া হয়।
যদিও ঢাবির উপাচার্যের পরামর্শে নিজ নিজ অনুষদের ডিন মহোদয়ের উদ্যোগে জুন মাসের মাঝামাঝি থেকেই ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও বাণিজ্য অনুষদের বেশ কিছু বিভাগ সীমিত পরিসরে অনলাইন ক্লাস শুরু করে। যে তালিকায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগও ছিল। একই সময়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ‘অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত বিষয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিচিত করা ও সম্ভাব্যতা যাচাই’ বিষয়ক জরিপ কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ করে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ থেকে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রমবিষয়ক পরবর্তী নির্দেশনা আসার আগ পর্যন্ত কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগ করোনাকালীন অনলাইন পাঠ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়।
এখানে একটি বিষয় পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা জরুরি যে অনলাইন ক্লাস পরিচালনা ও অনলাইন পাঠ কার্যক্রম পরিচালনার মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ যে জরিপ করে, সেখানে ‘অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম’–এর বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, অনলাইন ক্লাস নয়। অনলাইন পাঠ বা শিক্ষা কার্যক্রমের একটি উপকরণ হলো অনলাইন ক্লাস।
অনলাইন ক্লাস বলতে বোঝায় জুম, গুগল ক্লাসরুম, গুগল মিট, ওয়েবএক্সের মতো অ্যাপস ব্যবহার করে সরাসরি ক্লাস পরিচালনা। এই অ্যাপসগুলো ব্যবহার করে ক্লাস প্রদান ও গ্রহণ উভয়ই ব্যয়বহুল। এমনকি ফ্রি ভার্সনে ৪০ মিনিট ক্লাস পরিচালনা করলে এবং ক্লাসে অংশগ্রহণ করলে। আর এই অ্যাপসগুলো ব্যবহারে যে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট গতি দরকার হয়, তা কেবল বড় শহরগুলোতেই সম্ভব হয়। তবে পিক সময় যেটিকে বলা হয় মানে অফিস সময়ে, অনেক ক্ষেত্রেই ঢাকা শহরে বসেও সভা বা ক্লাসে যুক্ত হতে সমস্যা হয়। আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলের ইন্টারনেট সংযোগের গতির কথা না–ই উল্লেখ করলাম।
ঢাবির কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের জরিপে দেখা গেছে, ১৮৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৪৭ জন শিক্ষার্থী ঢাকা শহরে বসবাস করেন। জরিপে যে ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের পক্ষে মতো দিয়েছিলেন, বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা গেল ইন্টারনেট গতির কারণে জুম অ্যাপ ব্যবহার করে ৪০ জনের ক্লাসে মাত্র ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থী যুক্ত হতে পারছেন। সংগত কারণেই আমাদের অনলাইন পাঠ কার্যক্রমে অনলাইন ক্লাসের বিকল্প কিছু উপাদান নিয়ে ভাবতে হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে শিক্ষা উপকরণকে পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড, ভিডিও রেকর্ডিং, অডিও রেকর্ডিং, হ্যান্ডআউট, গবেষণা প্রবন্ধ/বইয়ের অধ্যায় হিসেবে ই–মেইল বা ফেসবুক ক্লোজ অফিশিয়াল গ্রুপে বা ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া ও নির্দিষ্ট রুটিন মানা, মেসেঞ্জার রুম সুবিধা নিয়ে শিক্ষকের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্ব, ক্লাসে ছয় থেকে সাতটি গ্রুপ করে দিয়ে নিজেদের মধ্যে পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা করা, নির্দিষ্ট টপিক ধরে ধরে কিছুদিন পরপর গ্রুপ প্রতিবেদন বা বাড়ির কাজ দেওয়া, গুগল লিংকের মাধ্যমে সারপ্রাইজ টেস্ট নেওয়া ইত্যাদি। অর্থাৎ অনলাইন ক্লাস নেওয়া যাবে না তা নয়, তবে ক্লাসের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং প্রয়োজনে অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি বিকল্প মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করতে হবে, যেন শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত না হয়। তবে কোনো উপায়ই শতভাগ কাজ করবে, আমরা এমন আশা করছি না। আমরা ট্রায়াল ও অ্যারর বেসিসে এগিয়ে দেখার চেষ্টা করতে পারি। পাশাপাশি কোন মাধ্যম দিয়ে অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো যায়, তা বোঝার চেষ্টা করতে পারি।
একটি বিষয় লক্ষ করুন, আমি, আপনি, বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সরকার আমরা সবাই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই অনলাইন ক্লাস কিংবা শিক্ষা কার্যক্রমের কথা ভাবছি। শিক্ষার্থীরা যেন সেশনজটে না পড়েন, তাঁরা যেন পড়াশোনার মধ্যে থাকেন, এ সবকিছু শিক্ষার্থীদের জন্যই। কিন্তু এই আমি আপনি যখন অনলাইন ক্লাসের স্রোতে গা ভাসিয়ে ৪০ জন শিক্ষার্থীর ক্লাসে ১০ কিংবা ১২ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে ক্লাস করছি, তখন আমরা বাকি ৩০ জন শিক্ষার্থীর মনোবল ভেঙে দিচ্ছি, যা শিক্ষক হিসেবে আমরা করতে পারি না। আর সে কারণেই আমি মনে করি, আপাতত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনলাইন ক্লাস কেবল মরীচিকা। এ ক্ষেত্রে তাই অন্যান্য অনলাইন মাধ্যমও অনলাইন পাঠ পরিকল্পনায় যুক্ত রাখা জরুরি। তবে আমি সেই সব সম্মানিত শিক্ষকের দলেও নই, যাঁরা অনলাইন ক্লাস নেবেন না বলে দলবদ্ধ হয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। আমি বরং আমাদের শিক্ষার্থীদের যে যে সীমাবদ্ধতার জন্য অনলাইন ক্লাস করতে পারছেন না, সেই চ্যালেঞ্জগুলোকে কাটিয়ে তুলে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর পক্ষে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো বিভাগের প্রতি কখনোই অনলাইন ক্লাস পরিচালনার জন্য চাপ দেওয়া হয়নি। ঢাবি প্রশাসন শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। শিক্ষার্থীদের সীমাবদ্ধতাগুলোকে যথাসম্ভব কমিয়ে তাঁদের পড়াশোনার ক্ষতি কমিয়ে আনার কথা বলেছে। পাশাপাশি আমাদের সীমিত সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে যতখানি সম্ভব অর্ধসমাপ্ত কোর্সগুলো শেষ করার চেষ্টা করার কথা বলা হয়েছে। যাতে করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর রিভিউ ক্লাস নিয়ে দ্রুত পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইন পাঠ কার্যক্রমের বিষয়টি একটি ভুল ব্যাখ্যার সৃষ্টি করেছে। এবং তাতে শিক্ষার্থীদের যে মনোবেদনার জন্ম হয়েছে, তা একজন শিক্ষক হিসেবে আমাকে ভাবিয়েছে। সেই ভাবনা থেকেই শিক্ষার্থীদের চোখ দিয়ে পুরো বিষয়টি দেখার চেষ্টা করেছি। সে পাশ থেকেই তাই শিক্ষার্থীদের জন্য সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য একটি ল্যাপটপ বা নিদেনপক্ষে একটি স্মার্টফোন নিশ্চিত করার আগ পর্যন্ত কেবল অনলাইন ক্লাস নয় বরং অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হোক।
* লেখক: চেয়ারপারসন, কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়