অধস্তন আদালতে ভার্চ্যুয়ালি ১৬০৪ আসামির জামিন

প্রতীকী ছবি

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে জামিন ও অতি জরুরি ফৌজদারি আবেদনের শুনানি শুরুর প্রথম দিনেই ২ হাজার ৪৩৩টি জামিনের আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে এই কার্যক্রম চলার প্রথম দিন ছিল আজ সোমবার। ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে জামিন ও অতি জরুরি ফৌজদারি আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ ১ হাজার ৬০৪ আসামির জামিনও মঞ্জুর করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন।      

সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন গতকাল রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে শুধু জামিন ও অতি জরুরি ফৌজদারি দরখাস্ত নিষ্পত্তির জন্য অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে সোমবার থেকে কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে গত বছরের ৯ মে ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০’ শিরোনামে এক অধ্যাদেশ জারি করে সরকার।

ফলে অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার সুযোগ তৈরি হয়। অধ্যাদেশের পর সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে প্র্যাকটিস নির্দেশনা (ব্যবহারিক দিকনির্দেশনা) প্রকাশ করা হয়। গত বছরের ১১ মে থেকে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়, যা দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথম।

রোববারের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের ব্যাপক বিস্তার রোধে ১২ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে জামিন ও অতি জরুরি ফৌজদারি দরখাস্ত নিষ্পত্তি করার উদ্দেশ্যে অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ওই সময়ে (সাপ্তাহিক ছুটি ও বর্ষপঞ্জি অনুসারে সরকার ঘোষিত ছুটি ব্যতীত) দেশের প্রত্যেক জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, শিশু আদালতের বিচারক এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিজে অথবা তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন এক বা একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন এবং এই আদালত (হাইকোর্ট) কর্তৃক জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করে শুধু জামিন ও অতি জরুরি ফৌজদারি দরখাস্তগুলো নিষ্পত্তি করার উদ্দেশ্যে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

এর আগে গত বছরের ২৬ জুলাই এক খুদে বার্তায় সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, গত বছরের ১১ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৫০ কার্যদিবসে সারা দেশের অধস্তন আদালতে ভার্চ্যুয়াল শুনানিতে মোট ১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৯টি জামিন-সংক্রান্ত দরখাস্ত নিষ্পত্তি হয়, যার বিপরীতে ৬৭ হাজার ২২৯ জনের (শিশু আদালতসহ) জামিন মঞ্জুর হয়।

করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে অধস্তন আদালতে শারীরিক উপস্থিতিতে নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হয়। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে জামিন ও অতি জরুরি ফৌজদারি দরখাস্ত নিষ্পত্তির কার্যক্রম আজ শুরু হলো। এ হিসেবে আজ দ্বিতীয় দফায় ভার্চ্যুয়াল জামিন আবেদন শুনানির প্রথম দিন।