নুসরাত হত্যা

অডিও-ভিডিও রেকর্ডিং কোনো সাক্ষ্য হতে পারে না: আসামির আইনজীবী

নুসরাত জাহান। ফাইল ছবি
নুসরাত জাহান। ফাইল ছবি

ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ও সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। এ সময় আসামির পক্ষে হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক দাবি করেন, ‘সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী আদালতে অডিও-ভিডিও রেকর্ডিং কোনো সাক্ষ্য হতে পারে না।’

আজ রোববার মামলার যুক্তিতর্কের অষ্টম দিনে আসামি রুহুল আমিনের পক্ষে এভাবে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবী এহসানুল হক। তাঁকে সহায়তা করেন হাইকোর্টের অপর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফারুক আহম্মদ, ফেনীর দুই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও কামরুল হাসান। ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে এই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। কাল সোমবার এ মামলায় নবম দিনের মতো আসামিদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের কথা রয়েছে।

আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক দাবি করেন, নুসরাত হত্যা মামলার আসামি রুহল আমিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমের কথোপকথনের যে অডিও রেকর্ডিং রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে উপস্থাপন করেছে, সেটি সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী কোনো সাক্ষ্য হতে পারে না। তিনি বলেন, ওই অডিও রেকর্ডিংয়ের কথোপকথনের কণ্ঠ রুহল আমিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমের কি না, সেটি সরকারের নিয়োজিত কোনো বিশেষজ্ঞ দিয়ে সত্যায়িত বা প্রমাণিত হয়নি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতে বলেন, যে ধারায় চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়েছে, সেটিও গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ, পেনাল কোডের ৩৪ ধারার বক্তব্য আর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩০ ধারার বক্তব্য এক নয়।

প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ৮ এপ্রিল তাঁর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলাটি ১০ এপ্রিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়।

এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম তদন্ত শেষে ২৯ মে ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পাঁচজনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রভুক্ত ১৬ জন আসামির মধ্যে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১২ জন ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।