গাইবান্ধায় অচেনা সেই প্রাণীর আক্রমণ থামছে না। গত দুই দিনে এই প্রাণীর আক্রমণে আরও দুজন নারী আহত হয়েছেন। এ নিয়ে আহত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩। প্রাণীটি নিয়ে মানুষের মধ্যে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী জানান, গতকাল রোববার সকাল থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নতুন করে দুজন নারী ওই প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এঁদের মধ্যে সোমবার দুপুরে পলাশবাড়ী উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়নের বরকতপুর গ্রামের আসাদুল ইসলামের স্ত্রী হাসনা বেগম (৩০) এবং রোববার সকালে পাশের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের ডুমুরগাছা গ্রামের মৃত সাত্তার মিয়ার স্ত্রী মোফেলা বেগম (৫৫) প্রাণীটির আক্রমণের শিকার হন। হাসনা বেগমকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপরজনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
চিকিৎসাধীন হাসনা বেগম জানান, তিনি সোমবার দুপুরে বরকতপুর কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে শেয়ালের মতো দেখতে একটি প্রাণী দৌড়ে এসে তাঁকে আক্রমণ করে। প্রাণীটি তাঁর কোমরের নিচে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় তিনি চিৎকার দিয়ে উঠলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। পরে তাঁকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নাকাই ইউপির সদস্য আবদুল মান্নান জানান, রোববার সকালে মোফেলা বেগম বাড়ির আঙিনায় কাজ করছিলেন। এ সময় একটি প্রাণী তাঁর বাঁ পায়ে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ওই নারীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাঁকে উদ্ধার করে। তাঁকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এসব বিষয়ে সোমবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তানভীর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হাসনা বেগমের কোমরে যে আঘাতের ক্ষত, তা কোনো প্রাণীর আক্রমণ থেকেই হয়েছে। তাঁকে অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। তিনি ভালো আছেন।
এলাকাবাসী জানান, দেড় মাস ধরে পলাশবাড়ী উপজেলার ছয়টি গ্রামে অচেনা ওই প্রাণীর আক্রমণ শুরু হয়েছে। গ্রামগুলো হচ্ছে তালুক কেঁওয়াবাড়ি, হরিনাথপুর, কিশামত কেঁওয়াবাড়ি, খামার বালুয়া, দুলালেরভিটা ও তালুকজামিরা। এই সময়ে ওই প্রাণীর আক্রমণে ফেরদৌস ইসলাম নামের একজনের মৃত্যু এবং অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের দাবি, প্রাণীটি দেখতে শিয়ালের মতো। প্রাণীটির মাথা ও লেজ আকারে বড়। প্রাণীটি ঝোপ-জঙ্গল, ধানের জমি থেকে বেরিয়ে এসে আক্রমণ করছে।