রজতজয়ন্তীর বিশেষ লেখা

শিক্ষার মান বাড়ানোই হোক প্রধান ভাবনা

মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল সম্পদে অপ্রতুল একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ হিসেবে। কিন্তু নিন্দুকদের আশঙ্কা অসত্য প্রমাণ করে একের পর এক বাধা পেরিয়ে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। এই এগিয়ে যাওয়ার পথ রচিত হয়েছিল কিছু অভূতপূর্ব ঘটনা, অভিনব ভাবনা, ভবিষ্যৎমুখী পরিকল্পনা ও উদ্যোগে। আমরা ফিরে দেখছি বাংলাদেশের উজ্জ্বল সেসব মুহূর্ত।

রাশেদা কে চৌধূরী
রাশেদা কে চৌধূরী

স্বাধীন বাংলাদেশে শুরুতে সাক্ষরতার হার ছিল মাত্র ১৬ শতাংশ। এখন দেশে সাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ দেশের প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজন কিছুটা হলেও পড়তে ও লিখতে পারেন। শুধু ধনী ও মধ্যবিত্তই নয়, নিম্নবিত্ত, স্বল্প আয়ের এমনকি বিত্তহীন মানুষের মধ্যেও শিক্ষার প্রতি ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। প্রায় শতভাগ অভিভাবক তাঁদের সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী। বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্যে, দেশে সরকারি, বেসরকারি, কিন্ডারগার্টেন ও এনজিও পরিচালিত বিভিন্ন ধরনের প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৩৯। এর মধ্যে সরকারি বিদ্যালয় ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। প্রাথমিক স্তরে দুই কোটির বেশি শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে, যার মধ্যে মেয়ে ও ছেলেশিশুর সংখ্যা সমান।

এখনো আমরা প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার সবাইকে এর আওতায় আনতে পারিনি। যদিও আদিবাসীদের ভাষায় প্রাক্‌–প্রাথমিক বইও করা হয়েছে। পাহাড়ি বা অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর শিশুরা যেন নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে মূলধারার শিক্ষা রপ্ত করে পরবর্তী সময়ে সহজে মূলধারায় যুক্ত হতে পারে, তাই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা একটি মাইলফলক। বিশ্বদরবারে আমাদের এই উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এই কার্যক্রমের গতি ও ব্যাপ্তি দুটোই বাড়াতে হবে।

প্রাথমিক স্তরে দুই কোটির বেশি শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে, যার মধ্যে মেয়ে ও ছেলেশিশুর সংখ্যা সমান

স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়াও রোধ করা যাচ্ছে। ২০০৫ সালের ৪৭ শতাংশের জায়গায় বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়ার হার প্রায় ১৪ শতাংশ। বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর কাছে নতুন বইও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ২০১০ সাল থেকে। এটি আমাদের একটি বড় অর্জন। টানা এক যুগের বেশি সময় ধরে সারা দেশে কয়েক কোটি শিক্ষার্থীর হাতে উৎসব করে নতুন বই তুলে দেওয়া হচ্ছে। খালি হাতে বিদ্যালয়ে গিয়ে চকচকে নতুন বই হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফেরার এই দৃশ্য শুধু অনন্য নয়, প্রায় বিরল।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষায় এই পরিবর্তনের সূচনা হয় ১৯৭২–৭৩ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণের মাধ্যমে। সদ্য স্বাধীন ও যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ প্রায় শূন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর সেই দূরদর্শী সিদ্ধান্তের সূত্র ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা অনেক সাফল্য অর্জন করতে পেরেছি।

রাজনৈতিক অঙ্গীকার

সব দেশে সব সময় শিক্ষার অগ্রগতিতে রাজনৈতিক অঙ্গীকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগে নামে-বেনামে সামরিক শাসনামলে শিক্ষার অগ্রগতি কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। ১৯৯১ সাল থেকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারগুলোর সময়ে শিক্ষার সব অঙ্গনে গতি ফিরে আসে। ২০১০ সালে নতুন শিক্ষানীতি প্রণীত ও গৃহীত হওয়ার পাশাপাশি ২০১৩ সালে সরকার ২৬ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারীকরণ করেছে, যা ১৯৭২ সালের পর রেকর্ড।

গণতান্ত্রিক শাসনামলে সবচেয়ে বড় অর্জন শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি। স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের এ অর্জন আলাদা করে চোখে পড়ার মতো। মেয়েশিক্ষার্থীরা এখন বিনা বেতনে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করতে পারে। এ ছাড়া তাদের জন্য আছে উপবৃত্তি কার্যক্রম। ফলে শুধু মেয়েদের নয়, বরং মেয়েশিশুদের ঝরে পড়াও কমানো গেছে এবং শিক্ষার সব ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে মেয়েদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১০ সালের শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করার কথা থাকলেও তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।

শিক্ষা প্রশাসন

শিক্ষা নিয়ে আমাদের কিছু করতে গেলে প্রথমত শিক্ষার্থী, তারপর শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অভিভাবক ও শিক্ষা প্রশাসন—এই পাঁচ ধরনের ‘স্টেকহোল্ডার’ই যথেষ্ট। এই শিক্ষা প্রশাসনকে অনেক সময় খেয়াল না করার কারণে শিক্ষায় কোনো ভালো উদ্যোগ, বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষাক্রম সংস্কার, যেমন পরীক্ষা বাদ দেওয়া ও ধারাবাহিক মূল্যায়ন হচ্ছে না।

সব ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রশাসনের দায়িত্ব পর্যবেক্ষণ করা। তবে এখানে স্থানীয় সরকারকে দায়িত্ব না দেওয়া একটা বড় দুর্বলতা। একজন শিক্ষককে বদলি করতে গেলেও এখানে অধিদপ্তরের অনুমতি নিতে হয়। এই কেন্দ্রীভূত শিক্ষাব্যবস্থার কারণে আমাদের অনেক উদ্যোগ হোঁচট খায়।

মিড ডে মিল

দরিদ্র পরিবারের শিশুদের জন্য স্কুলে ‘মিড ডে মিল’ নামে দুপুরের খাবারের কর্মসূচিটি ছিল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, সেই কার্যক্রম এখন স্থবির। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের মধ্যে দুপুরের খাবার কর্মসূচি সর্বজনীন করার ঘোষণাও দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে, এটা বাস্তবায়ন করা, বিশেষ করে এর ব্যবস্থাপনা খুব কঠিন। আমরা যদি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সঙ্গে বাস্তবায়ন করি, তাহলে কেন কঠিন হবে, তা বোধগম্য নয়।

শুধু বড় বড় অবকাঠামো নয়, শিক্ষায়ও মেগা প্রকল্প প্রয়োজন। এতে চরাঞ্চল, পাহাড়ি এলাকা ও বিভিন্ন অনগ্রসর অঞ্চলে শিশুদের ঝরে পড়া কমানো সম্ভব হবে, যার সুদূরপ্রসারী ইতিবাচক প্রভাব পড়বে শিক্ষাক্ষেত্রে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত

বাংলাদেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনো শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত অসম। একজন শিক্ষকের পক্ষে শ্রেণিকক্ষের ৬০-৭০ শিক্ষার্থীকে মানসম্পন্ন শিক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। যদিও বড় বড় স্কুলে বিভাগ করে দিয়েছে। তাদের সেই সক্ষমতা আছে। কিন্তু গ্রামে তো তা নেই। প্রাথমিক শিক্ষার বেলায় সরকারের স্লোগান—সব শিশুর জন্য শিক্ষা। শিক্ষার্থীর জন্য তো কেবল ভর্তিই যথেষ্ট নয়। তাদের জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক আছে কি না, তা–ও খেয়াল করতে হবে।

শিক্ষক নিয়োগ

প্রতিবছর কয়েক হাজার শিক্ষক কিন্তু অবসরে যান। সেখানে সঙ্গে সঙ্গে নতুন শিক্ষককে স্থলাভিষিক্ত করা দরকার। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং কেন্দ্রীভূত শিক্ষার কারণে অনেক সময় লেগে যায় শিক্ষক নিয়োগ করতে। আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চল, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও চা–বাগান এলাকায় শিক্ষকস্বল্পতা দেখেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা যদি এসব ক্ষেত্রে লক্ষ না রাখি, তাহলে শিক্ষার্থীরা আর লেখাপড়া করে বের হতে পারবে না।

প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত শিক্ষক নেই। এটা একটা বড় দুর্বলতা। বিশেষ করে প্রাথমিকে শিক্ষকদের প্রস্তুতি–প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। এখন প্রাথমিকে আছেন লাখ লাখ শিক্ষক, অনেক দেশের জনসংখ্যাও এত নয়। এই শিক্ষকদের কোনোরকম প্রশিক্ষণ না দিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠানো হয়েছে। ইদানীং অবশ্য কিছুটা পরিবর্তন এসেছে, প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষকদের দায়িত্বে পাঠানো হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বলা হচ্ছে, প্রশিক্ষণ দিন, তারপর দিন শ্রেণিকক্ষে। তবে এটা পুরোপুরি কার্যকর করতে আমাদের দীর্ঘদিন লাগবে।

সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রায় ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পরিবারের প্রথম প্রজন্মের স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন সদস্য। ফলে তাদের জন্য বাড়িতে লেখাপড়া করার তেমন সুযোগ নেই। সেখানে সব ভরসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর। সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক যদি পূর্ণাঙ্গভাবে তৈরি না থাকেন, তাহলে তা আরও বড় এক চ্যালেঞ্জ।

নতুন শিক্ষাক্রম

এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছে নতুন শিক্ষাক্রম। নতুন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে এই শিক্ষাক্রম দরকার আছে। কারণ, নানা ধরনের বিভাজন ছিল আমাদের শিক্ষায়। যেমন বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা। আমরা জানি যে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী মানবিকের অনেক কিছুই জানে না। মানবিকের শিক্ষার্থীরা জানে না, পৃথিবী এখন রকেট সায়েন্স ও রোবটিকস নিয়ে কাজ করছে। এর জন্য শিক্ষার নীতি খুব দরকার। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা যদি বিদ্যুৎ, সৌরশক্তি বা এ ধরনের বিষয় সম্পর্কে ধারণা পেত, তাহলে তার জন্য আগামী দিনে যেকোনো ধরনের কারিগরি বা প্রযুক্তিকেন্দ্রিক স্কুলে যাওয়া সহজ হতো।

হাতে–কলমে শিক্ষা

২০০৫ সালের ৪৭ শতাংশের জায়গায় এখন প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার প্রায় ১৪ শতাংশ

নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা শুধু প্রতিষ্ঠানে নয়, পুরো ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে যাবে। ফলে শিক্ষার্থীরা ঘরে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাতে–কলমে শিখবে। আমি নিজে দেখেছি, গ্রামের স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে শিক্ষক পড়াচ্ছেন গাছের মূল, কাণ্ড ও পাতা কী। তখন আমি শিক্ষার্থীদের বাইরে গিয়ে সত্যিকারের গাছ দেখে এসব চিনে আসতে বলেছিলাম, যাতে বিষয়গুলো তাদের মাথার মধ্যে গাঁথা থাকে। এটাই এই শিক্ষাক্রমের মূল কথা। মধ্যবিত্ত ঘরের মা–বাবাদের উচিত প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের স্বাধীন, সৃজনশীল চিন্তা করতে উদ্বুদ্ধ করা। সৃজনশীল কাজে যেন তারা যুক্ত হতে পারে, তা নিশ্চিত করা।

বাল্যবিবাহ

প্রাথমিকে মেয়েশিশুরা যখন একটু বড় হতে থাকে, তখন শ্রেণিকক্ষে অনুপস্থিতির হার বাড়ে। বিশেষ করে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। মা-বাবারা মনে করেন, এখন যথেষ্ট হয়েছে, বিয়েশাদি দিয়ে দেওয়া দরকার, যেহেতু তখন তারা একটা শারীরিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। বাংলাদেশে নারী ও মেয়েশিশুর ওপর সহিংসতার সামগ্রিক পরিস্থিতিতে মা-বাবারা আতঙ্কিত থাকেন। ফলে তাঁদের কাছে মনে হয়, এসব পড়াশোনার চেয়ে বিয়ে দেওয়া সহজ। আমরা তো উদাহরণটা জানি, যে মেয়ে ২০২০ সালে স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে হ্যাটট্রিক করে গোল্ড মেডেল নিয়েছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে, তার তো দুই বছরের মাথায় বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এখন ফুটবল মাঠের বদলে সংসার সামলাচ্ছে। এটা কাম্য নয়। যদিও পরবর্তী সময়ে আমরা শুনি, নীতিনির্ধারকের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাল্যবিবাহ একান্তই নিজেদের বিষয়। তবে গণমাধ্যমের বরাতে এখন কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিন্তু আমরা এ–ও জানি, বাল্যবিবাহ রাতের আঁধারে কিংবা অন্য এলাকায় গিয়ে সেরে ফেলা হয়। এসব ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

শিক্ষা গবেষণা

প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে এত চিন্তা, ভাবনা ও পরিকল্পনা, কিন্তু তা গবেষণাভিত্তিক নয়। গবেষণায় বিনিয়োগ দেখি না। শিক্ষা গবেষণায় বিনিয়োগ না করে কোনো দেশ শিক্ষায় উন্নতি করতে পারবে না। আমাদের দেশেই তো কৃষি গবেষণায় বাড়তি বিনিয়োগ করে আমরা সুফল পেয়েছি। তাহলে শিক্ষা গবেষণা নয় কেন? আমরা তো শিক্ষা নিয়ে গবেষকও তৈরি করি না।

আমাদের সামনে এখন ভিশন ২০৪১। টেকসই অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) আমরা স্বাক্ষর করেছি, তাতে আছে সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষার কথা। বর্তমানে পৃথিবী শুধু পাঠ্যপুস্তকের পুঁথিগত জ্ঞানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এখন বাস্তবভিত্তিক সহপাঠের বিষয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাই সাপ্লিমেন্টারি বা সহায়ক উপকরণের গুরুত্ব ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আমরা সেখানে এখনো বেশি দূর এগোতে পারিনি।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক দৃশ্যমান অর্জন আছে। সেসব অর্জন ধরে রাখা এবং শিক্ষার মান বাড়ানো হোক আমাদের প্রধান ভাবনা।

রাশেদা কে চৌধূরী: গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা