স্বর্ণপদকপ্রাপ্তদের সাতজন নারী
মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিয়ে। এক মাস বয়সী সন্তানকে কোলে নিয়েই ভর্তি হলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগে। এরপর সাদিয়া আরেক সন্তানের মা হলেও সব সামলে শিক্ষাজীবনের চূড়ান্ত সাফল্য পেয়েছেন।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ সমাবর্তনে আচার্য, চেয়ারম্যানস ও উপাচার্য—এই তিনটি ক্যাটাগরিতে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত নয়জন শিক্ষার্থীর মধ্যে সাতজনই মেয়ে। তাঁদেরই একজন সাদিয়া। চেয়ারম্যানস স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী সাদিয়া বললেন, ‘আমার কাজের মধ্য দিয়ে সবার জন্য আনন্দময় পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই।’
আচার্য স্বর্ণপদক পাওয়া শ্রাবণী সরকার বললেন,‘বিবিএতে ভর্তির পর প্রথম সেমিস্টারে রেজাল্ট ভালো হলো। আমি জানতাম, ভালো কিছু পেতে চাইলে সংগ্রাম করতেই হবে।’
কমার্স ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল বিবিএ থেকে চেয়ারম্যানস স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত অনন্যা ইসলামের। অনন্যা বললেন, ‘টানা তিনটি সেমিস্টারে ভালো ফলাফল পাওয়ায় শিক্ষকদেরও যথেষ্ট সহানুভূতি পেলাম। আর বাবা-মা ও আমার হাজবেন্ডের অনুপ্রেরণা তো ছিলই।’
চেয়ারম্যানস স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত নুশেরা তাজরিন বললেন, ‘আইন পেশাটা মেয়েদের জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং। আমি শিক্ষক বা বিচারক হতে চাই।’
উপাচার্য স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত দেবিকা সিনহা ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেছেন। তিনি বললেন, ‘ আমার এই ফলাফলে বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যরা আমাকে ক্রমাগত উৎসাহ জুগিয়েছেন।’
উপাচার্য স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত মাসুমা দিল আফরোজ বললেন, ‘আমাদের দেশে আশ্রয়হীন শিশুরা পথে পথে ঘুরে বেড়ায়। এর অবসান ঘটাতে আমি কাজ করতে চাই।’
আচার্য স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত নওশীনের দুশ্চিন্তা ছিল মা–বাবা যেকোনো দিন তাঁকে বিয়ে দিয়ে দিতে পারেন। তাই নিজেই কিছু একটা করে মা–বাবাকে বোঝাতে হবে এখনই বিয়ে নয়। সেই চিন্তা থেকে ছোট পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। চার বছরের ব্যবধানে বর্তমানে তিনি দুটি শোরুমের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। পড়াশোনাও চালিয়ে গেছেন ঠিকমতো। নওশীন বলেন, ‘স্বপ্নপূরণে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম। তাই সাফল্য পেয়েছি।’