জামালপুরের আশেক মাহমুদ কলেজের মূল ফটক পেরিয়ে বকুল চত্বরে পৌঁছাতেই দেখা হলো ডিবেটিং সোসাইটির বিতার্কিকদের সঙ্গে। শীতের সকালের মিষ্টি রোদে, ক্যাম্পাসের সবুজ ঘাসে বসে চলছিল তার্কিকদের পক্ষ-বিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন। সেখানেই কথা হয় ডিবেটিং সোসাইটির একজন সংগঠক নূর আলম খানের সঙ্গে। তিনি বললেন তাঁদের এই সংগঠনের শুরুর গল্প।
‘মুক্তচিন্তায় বিকশিত হোক যুক্তিবাদী সমাজ’ স্লোগান নিয়ে ২০১৫ সালের শেষের দিকে যাত্রা শুরু করে আশেক মাহমুদ কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি। যাত্রার পরপরই ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হই আমরা। সেখান থেকে সাহস নিয়েই পথচলা অব্যাহত থাকে।’ বলছিলেন নূর আলম। ২০১৮ সালে বিজয় দিবস উপলক্ষে আশেক মাহমুদ কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি আয়োজন করে বিজয় দিবস আন্তবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতা। এতে অংশ নেয় কলেজের ১৬টি বিভাগ। আর তাতে চ্যাম্পিয়ন হয় উচ্চমাধ্যমিক গ্রুপ এবং রানারআপ হয় রসায়ন বিভাগ। সংগঠনটির একজন তার্কিক শাদমান আকিফ বলেন, ‘জাতীয় দিবসগুলোর পাশাপাশি উন্নয়ন মেলা, তথ্যপ্রযুক্তি মেলাসহ জেলা প্রশাসন আয়োজিত প্রায় প্রতিটি প্রতিযোগিতায় কলেজ পর্যায়ে আঞ্চলিকভাবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়েও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আমাদের সংগঠনের বিতার্কিকেরা।’
বিতার্কিকদের সঙ্গে কথা বলার একফাঁকে উপস্থিত হন ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক স্বরূপ কাহালী। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিতর্ক চর্চার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা শুদ্ধ উচ্চারণ, আবৃত্তি, স্বেচ্ছায় রক্তদান ও বৃক্ষরোপণের মতো কাজের সঙ্গে জড়িত আছে। কলেজের শিক্ষার্থীদের বাইরেও পুরো জেলার বিতর্ক চর্চা চালু রাখার জন্য কাজ করছি আমরা। এ জন্য নিয়মিত জাতীয় পর্যায়ের বিতার্কিকদের এনে কর্মশালার মাধ্যমে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সামনে আমরা পুরো জেলার সব কলেজ নিয়ে আন্তকলেজ বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করব।’
রোদের তেজ বাড়তে থাকে। শিক্ষার্থীরা পা বাড়ান ক্লাসরুমের দিকে। আমরা যাই আশেক মাহমুদ কলেজ ডিবেটিং সোসাইটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও কলেজটির অধ্যক্ষ মুজাহিদ বিল্লাহ ফারুকীর কাছে। তিনি বলেন, ‘বিতর্ক চর্চা করে একজন শিক্ষার্থী মননশীলতার পরিচয় দেয়। জ্ঞান বৃদ্ধির পাশাপাশি বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে যুক্তি দিয়ে ভাবা শিখতে হবে। বিতর্ক চর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সেই সুযোগটাই পায়।’