স্কুলপড়ুয়া টেন্ডুলকারের গল্প বললেন তিনি

স্কুলপড়ুয়া টেন্ডুলকারও দর্শনীয় সব শট খেলতেন। ছবি: টুইটার
স্কুলপড়ুয়া টেন্ডুলকারও দর্শনীয় সব শট খেলতেন। ছবি: টুইটার

‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’। শচীন টেন্ডুলকারের ক্ষেত্রে কথাটা পুরোপুরি সত্য। তাঁর প্রতিভার স্ফুরণ ঘটেছিল শৈশবেই। নামডাক ছড়িয়ে পড়েছিল স্কুল ক্রিকেটে। এসব তো মোটামুটি সবারই জানা। জাতীয় দলের পথ খুলতে টেন্ডুলকার প্রথম নজর কেড়েছিলেন কার?

দীলিপ ভেংসরকার। ভারতের সাবেক অধিনায়ক। ভেংসরকার তখন জাতীয় দলে অধিনায়ক। টেন্ডুলকার স্কুল ক্রিকেটে উইলোবাজি করছেন বোলারদের ওপর। ১৯৮৮ সালের সেই সময়ে টেন্ডুলকারের প্রতিভায় মুগ্ধ হয়েছিলেন ভেংসরকার। আর তাতেই খুলে যায় মুম্বাই রাজ্য দল হয়ে দেশের জার্সি গায়ে তোলার পথ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে ফেসবুক লাইভ আলাপচারিতায় তার স্মৃতিচারণা করেছেন ‘কর্নেল’খ্যাত সাবেক এ ব্যাটসম্যান। সেবার ভারত সফরে এসেছিল নিউজিল্যান্ড। তাদের বিপক্ষে মুম্বাই টেস্ট ছিল ভেংসরকারের ক্যারিয়ারে শততম টেস্ট।

টেন্ডুলকারের গল্প আগেই শুনেছিলেন ভেংসরকার। কিন্তু কেমন প্রতিভা তা যাচাই করে দেখেননি। ভেংসরকার বলেন, ‘তখন আমি ভারতের অধিনায়ক। মুম্বাইয়ে নিজের শততম টেস্ট খেলব। সেখানে (ওয়াংখেড়ে) অনুশীলন করছিলাম। কোচ বাসুদেব টেন্ডুলকারকে খুব পছন্দ করতেন। বলেছিলেন, ছেলেটাকে দেখো, দুর্দান্ত। বলেছিলাম, এখন না পরে দেখি।’

ভেংসরকার স্মৃতিচারণা করে চলেন, ‘সে (কোচ) তাকে মাঠে নিয়ে এল। এবার তো দেখতেই হবে। কপিল দেব, আরশাদ আইয়ুব, মনিন্দর সিং ও চেতন শর্মাকে অনুরোধ করলাম ছেলেটাকে একটু বল করতে। ওরা তো অবাক। ভাবভঙ্গিতে বুঝিয়ে দিচ্ছিল “বিষয়টা কী? অনূর্ধ্ব-১৫ শ্রেণির একটা পুঁচকেকে বল করতে হবে কেন?”’

কপিলরা শেষ পর্যন্ত রাজি হন। বাকিটা শুনুন ৬৪ বছর বয়সী ‘কর্নেল’-এর মুখেই, ‘বললাম, স্কুল ক্রিকেটে সে প্রচুর রান করেছে। দেখতে হবে কেমন ব্যাট করে। বোলারদের কুর্নিশ জানাই। ওরা তখন প্রতিষ্ঠিত। তবু বল করতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু শচীন সবাইকে চমকে দিয়েছিল। সে খুব ভালো ব্যাট করে।’

১৫ বছর বয়সে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকান টেন্ডুলকার। ছবি: টুইটার
১৫ বছর বয়সে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকান টেন্ডুলকার। ছবি: টুইটার

সেদিন সন্ধ্যায় মুম্বাই দল নির্বাচনের বৈঠক ছিল। ভেংসরকার তখন রাজ্য দলের অধিনায়ক। ১৪ বছর বয়সী টেন্ডুলকারকে মুম্বাই দলে নেওয়ার প্রস্তাব করেন ভেংসরকার। আসে পাল্টা যুক্তি। তাঁর ভাষায়, ‘ওরা বলেছিল, একটু তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। চোট লাগলে দোষ পড়বে আমাদের ওপর। অপেক্ষা করি। ১৫ জনের দলের সঙ্গে থাকুক। দলের পরিবেশটা বুঝতে পারবে।’

মুম্বাইয়ের হয়ে ১৯৮৭-৮৮ রঞ্জি ট্রফিতে টেন্ডুলকার শুধু বিকল্প ফিল্ডার হিসেবে মাঠে নেমেছেন। পরের বছর জায়গা করে নেন জাতীয় দলে। ভেংসরকারের ভাষায়, ‘দুলীপ ট্রফিতে সেঞ্চুরি, ইরানি ট্রফিতে সেঞ্চুরি। এরপর ১৯৮৯ সালে আমরা পাকিস্তানে যাই তাকে নিয়ে। বাকিটা ইতিহাস।’

সেই ইতিহাস, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান ও সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির।