বুমরা কখনোই ভুলবেন না যে দিনটি
>কিংসটন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে হ্যাটট্রিক করেছেন ভারতের পেসার যশপ্রীত বুমরা। তাঁর আগুনে ১০০ রান তোলার আগেই ৭ উইকেট হারিয়ে দিনের খেলা শেষ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
স্যাবাইনা পার্কে দ্বিতীয় দিনের শুরুতে ছিলেন হনুমা বিহারি। ধৈর্য আর একাগ্রতা দিয়ে ২২৫ বলের ইনিংসে তুলে নিয়েছেন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি (১১১)। আর ব্যাটিংয়ের শেষ পাতে ইশান্ত শর্মার ফিফটি। আর এতে প্রথম ইনিংসে ৪১৬ রান তোলে ভারত। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে তাই ভারতের ব্যাটিং নিয়েই বেশি আলোচনা হওয়ার কথা। কিন্তু দলে যশপ্রীত বুমরার মতো বোলার থাকলে কখনো উল্টোটাও হতে পারে! কাল হ্যাটট্রিক করেই সেটি জানিয়ে দিলেন এই পেসার।
দ্বিতীয় দিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৩ ওভার খেলতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর মধ্যেই ৭ উইকেট হারিয়ে তুলতে পেরেছে মাত্র ৮৭ রান। ৯.১ ওভার বল করে বুমরা একাই নিয়েছেন ৬ উইকেট। সব মিলিয়ে বুমরার সুইং ও গতির অসামান্য প্রদর্শনীতে বিহারি-শর্মার ব্যাটিং যেন কারও মনেই থাকেনি! এ পেসারের তোপে দ্বিতীয় দিন শেষে হাতে ৩ উইকেট রেখে ৩২৯ রানে পিছিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
টেস্টে ভারতের তৃতীয় বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করলেন বুমরা। ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কলকাতা টেস্টে হ্যাটট্রিক করেছিলেন হরভজন সিং। এর পাঁচ বছর পর করাচি টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজের প্রথম ওভারেই হ্যাটট্রিক তুলে নেন ইরফান পাঠান। আর কাল বুমরা; কতটা মারাত্মক ছিলেন বুঝিয়ে দেবে তখনকার বোলিং পরিসংখ্যান—মাত্র ২০ বলের ব্যবধানে ৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন তিনি।
আশ্চর্যের ব্যাপার হলো ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ১২তম টেস্ট খেলছেন বুমরা। সব কটিই খেলেছেন দেশের বাইরে। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ইনিংসে ন্যূনতম ৫ উইকেট নিয়েছেন বুমরা। আর এ কীর্তি তিনি গড়েছেন ভারতের ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে, সেটিও প্রতিটি দেশে নিজের প্রথম সফরে! ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপ তাই টুইট করেছেন, ‘বুমরার মতো প্রতিভা জীবনে একবারই আসে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে নবম ওভারে হ্যাটট্রিক তুলে নিলেও তোপের শুরুটা করেছিলেন সপ্তম ওভার থেকে। সে ওভারে বুমরার প্রথম বলটাই ছিল ইয়র্কার। এরপর তিনটি ডেলিভারিতে ছিল সুইংয়ের মিশেল। ওপেনার জন ক্যাম্পবেল তা সামলাতে না পেরে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। নবম ওভারে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বলে যথাক্রমে ড্যারেন ব্রাভো, সামারাহ ব্রুকস ও রোস্টন চেজকে তুলে নেন বুমরা। ব্রাভোকে দ্বিতীয় স্লিপে আর ব্রুকস-চেজকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন তিনি। এরপর জেসন হোল্ডার ও ক্রেগ ব্রাফেটকেও তুলে নেন বুমরা।
টেস্টে যেকোনো পেসারের জন্য এমন একটা দিন স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতোই অনুভূতি। কোনোভাবেই ভুলে থাকা যায় না। বুমরাও ভুলবেন না। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে তাঁর টুইট, ‘এ দিনটা আমি ভুলব না।’ তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিন্তু ভুলে থাকতে চায়, যতটা সম্ভব!