রশিদকে এত পছন্দ কোহলির!

রশিদের বোলিংয়ের মহা ভক্ত কোহলি। ফাইল ছবি
রশিদের বোলিংয়ের মহা ভক্ত কোহলি। ফাইল ছবি

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে রশিদ খানের আবেদন এখন অন্য মাত্রা ছুঁয়েছে। আফগানিস্তানের এই লেগ স্পিনারকে পেতে রীতিমতো কাড়াকাড়ি হয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও যে রশিদ কত বড় সম্পদ সেটা বোঝা গেছে মিট দ্য ক্যাপটেনস নামের এক অনুষ্ঠানে। লন্ডনের এই অনুষ্ঠানে ২০১৯ বিশ্বকাপের দশ দলের দশ অধিনায়ক এক ঘণ্টার প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে উপস্থিত সবার আগ্রহ মেটানোর চেষ্টা করেছেন।

এ ধরনের অনুষ্ঠানে সাধারণত যা হয়, নিজ নিজ দেশের দর্শকের আগ্রহের কথা চিন্তা করে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। এ কারণেই ইংলিশ অধিনায়ক এউইন মরগান ও বিরাট কোহলিকে বেশি কথা বলতে হয়েছে। এর মাঝে এক আফগান সাংবাদিক একটু প্রথা ভঙ্গ করলেন। নিজ দেশের অধিনায়ক গুলবদীন নাইবের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করার আগেই প্রশ্ন রাখলেন কোহলির কাছে। আফগানিস্তানের সেরা অস্ত্র রশিদকে কেমন লাগে কোহলির?

এর আগেই রশিদের এক দফা গুনগান শোনা হয়ে গেছে সবার। এক কিশোর চমৎকার এক প্রশ্ন করেছিল। দশ অধিনায়কের যদি অন্য দল থেকে একজন খেলোয়াড় দলে নেওয়ার সুযোগ থাকত, কাকে নিতেন। মাশরাফি বলেছেন বিরাট কোহলির কথা। কোহলি নিজে বলেছেন ফাফ ডু প্লেসির কথা। ফাফ ডু প্লেসি অবশ্য বেশ কয়েকজনকে নিতেন, পেসার হিসেবে বুমরা, স্পিনার হিসেবে অবশ্যই রশিদ খান। নিজ দলে ইমরান তাহিরের মতো একজন লেগ স্পিনার থাকার পরও। কেন উইলিয়ামসনও একটু পরে নিশ্চিত করেছেন দলে ইশ সোধি থাকলেও সম্ভব হলে নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে রশিদকে পেতে তাঁরও ইচ্ছা জাগে।

দলে দুজন লেগ স্পিনার আছে কোহলির। তাই হয়তো আর রশিদকে তাঁর দরকার হচ্ছে না। কিন্তু রশিদকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেতেও খুব একটি আগ্রহী নন তিনি। তিন বছর ধরে খেলেও যে রশিদ-রহস্য উন্মোচন করতে পারছেন না কোহলিরা, ‘আমি ওকে তিন বছর ধরে আইপিএলে বল করতে দেখছি। এবারই প্রথম আমি ওকে খেলেনি। এটা দুর্ভাগ্যজনক কারণ রশিদও বলেছে, ও আমার বিপক্ষে বল করার অপেক্ষায় ছিল। আমি ওর বিপক্ষে ব্যাট করতে মুখিয়ে ছিলাম। তিন বছরে এই প্রথম আমি বাইরে বসে ওর কোন বল কেমন হবে সেটা বলার চেষ্টা করেছি। ১০ বারের মধ্যে নয়বার সঠিক বলতে পেরেছি। তিন বছরে এই প্রথম! সে এতটাই ভালো।’

এরপরই বর্তমানের অন্য সব লেগ স্পিনার থেকে রশিদ কেন আলাদা সেটা ব্যাখ্যা করেছেন ভারত অধিনায়ক, ‘সে অসাধারণ। তার স্কিল সেট দারুণ। ওর বলের গতিটাই ওকে আলাদা করে দেয়। ওর ভ্যারিয়েশনও খুবই সূক্ষ্ম। সে কোনো সময়ই দেয় না বল বোঝার। ফ্লাইটের বলও ব্যাটে এত দ্রুত আসে! কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্যাডের ফাঁক দিয়ে যায়, এলবিডব্লু বা বোল্ড হয়ে যায় ব্যাটসম্যান।’

মাঠে খুবই আগ্রাসী আচরণ করেন কোহলি। দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় শরীরী ভাষায় আক্রমণ ফুটে ওঠে সব সময়। রশিদ খানও মাঠে খুবই আগ্রাসী। গত এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে টাই হওয়া ম্যাচে ও পাকিস্তানের সঙ্গ একদম শেষ মুহূর্তে হারের ম্যাচে তাঁর আচরণ আলাদাভাবে চোখে পড়েছে। রশিদের এই নিবেদন, এই আগ্রাসন খুবই ভালো লাগে কোহলির। এ জন্যই রশিদকে এত ভালো লাগে কোহলির, ‘ওর মধ্যে ফাস্ট বোলারের সেই আগ্রাসী মনোভাবটা আছে। একজন স্পিনারের মধ্যে এটা দেখা খুবই বিরল। আমি প্রতিদ্বন্দ্বী মনোভাবের লোক পছন্দ করি। এবং ওর আচরণ আমার দারুণ লাগে। ওর জন্য শুভকামনা। কারণ ও যখন ভালো বল করে তখন আপনাকে সেটা স্থির হয়ে বসে দেখতেই হবে। আফগানিস্তানের জন্য বিশ্বকাপে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে সে।’