কষ্টের জীবন কাকে বলে, এখনো ভোলেননি মিরাজ
>মিরাজ উঠে এসেছেন খুব সাধারণ পরিবার থেকে। কীভাবে বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যেতে হয়, তাঁর ভালোই জানা। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি কাজ করবেন শিশু অধিকার নিয়ে
তিন বছর আগেও খুলনা শহরের খালিশপুরের দক্ষিণ কাশিপুর এলাকায় একটা টিনের ঘরে ছিল তাঁর আবাস। মেহেদী হাসান মিরাজের ঠিকানা এখন বদলেছে। সরকারের পক্ষ থেকে খুলনায় বাড়ি পেয়েছেন। বিয়ে করার পর ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনছেন। মিরাজের পৃথিবী বদলেছে। সচ্ছল-স্বচ্ছন্দ এ জীবনেও অতীত কিন্তু ভোলেননি। সংগ্রামমুখর কষ্টের সেই জীবনের কথা অকপটেই বলেন। আজ যেমন বললেন জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের অনুষ্ঠানে।
আজ আনুষ্ঠানিকভাবে মিরাজকে ‘শিশু অধিকার দূত’ হিসেবে ঘোষণা করেছে ইউনিসেফ। শিশু অধিকার প্রচারের দূত হিসেবে কাজ করবেন বাংলাদেশ দলের এই স্পিন অলরাউন্ডার। শিশুদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে রোমাঞ্চিত মিরাজের মনে পড়ে গেল তাঁর কষ্টের শৈশবটা, ‘ক্রিকেট যখন শুরু করেছি, আপনারা জানেন নিশ্চয়ই, অনেক কষ্ট করে এগোতে হয়েছে। অনেক বাধা-প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছি। কত যে সংগ্রাম করতে হয়েছে জীবনে! খুব সাধারণ পরিবার থেকে বেড়ে উঠেছি। বুঝতে পারি, অনুভব করতে পারি, সাধারণ একটা পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা একটা শিশুর সামনে কত প্রতিবন্ধকতা থাকে। ওপরে যেতে হলে কত বাধা থাকে। আমার খুব ভালো লাগছে শিশুদের নিয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়ে। আশা করি নিজের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নিতে পারব সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে।’
শিশুদের অধিকার তুলে তো ধরবেনই। পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানি, স্যানিটেশন, জীবাণুমুক্ত থাকাসহ শিশু সুরক্ষায় জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে ইউনিসেফের সঙ্গে কাজ করবেন মিরাজ। ২০০৬ সালে একইভাবে ইউনিসেফের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন সাকিব আল হাসানও। পরে সংস্থাটির শুভেচ্ছাদূত হয়েছিলেন বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হলে প্রথম এক-দুই বছর এভাবেই যুক্ত হতে হয়। মিরাজকে তাই এখনই সংস্থাটির শুভেচ্ছাদূত বলা যাবে না। বলতে হবে শিশু অধিকার দূত।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এদুয়ার্দ বেগবেদার আশাবাদী, নির্ধারিত সময়ে মিরাজও সাকিবের মতোই শুভেচ্ছাদূত হবেন, ‘এ দেশে ক্রিকেটের বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে ক্রিকেটারদের জাতীয় আইকন হিসেবে দেখা হয়। তাঁরা যখন কথা বলেন, দেশের মানুষ তা শোনে। আমরা বিশ্বাস করি, এ দেশের শিশুদের অধিকার সুরক্ষিত করতে মেহেদী হাসান মিরাজের কণ্ঠ ব্যবহার করা যেতে পারে।’
ইউনিসেফের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে মিরাজও ভীষণ খুশি, ‘আমার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ছিল শিশুদের নিয়ে কাজ করার। যখনই সুযোগ পাই, শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাই। যে স্কুলে পড়াশোনা করেছি সেখানে যাই, বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলি। গ্রামে যারা সুবিধাবঞ্চিত শিশু, ওদের সঙ্গে সময় কাটাই। এখন তো আরও ভালোভাবে শিশুদের নিয়ে কাজ করতে পারব। আশা করি ইউনিসেফ আমাকে সহায়তা করবে। তাতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করাটা আরও সহজ হবে। আশা করি সবাই আমাকে সহযোগিতা করবেন।’