ইরানি গোলরক্ষকের অবিশ্বাস্য রেকর্ড
রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পেনাল্টি থামিয়ে দেওয়া সেই গোলরক্ষককে মনে আছে? তিনি ইরানের গোলরক্ষক আলিরেজা বেইরানভান্দ। ২৬ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক আবারও আলোচনায় এশিয়ান কাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে এক থ্রো করে। গোলপোস্ট থেকে থ্রোয়ে বল পার করেছেন প্রায় ৭০ গজ!
এশিয়ান কাপের ‘গ্রুপ ডি’ থেকে বুধবার ইরাকের মুখোমুখি হয়েছিল ইরান। এই ম্যাচে আলিরেজা দেখিয়েছেন বল থ্রো করার জাদু। আক্রমণভাগে ছিলেন ইরানের সরদার আজমুন। তিনি একা তখন নিজেদের অর্ধ থেকে বেরিয়ে প্রতিপক্ষের অর্ধে ঢোকার অপেক্ষায়। তাঁকে লক্ষ্য করেই বল ছোড়েন আলিরেজা। কিছুটা দৌড়ে এসে হাত দিয়েই বল ছুড়ে মারেন আজমুনের দিকে। একেবারে নির্ভুল নিশানা। বল ঠিক ঠিক খুঁজে নিয়েছে আজমুনকেই। প্রায় ৬৮ গজ দূরে দাঁড়িয়ে থাকা সরদার আজমুনের সামনেই এসে পরে বলটি। কিন্তু আজমুন বেশি দূর নিয়ে যেতে পারেননি। ইরাকের রক্ষণে বল হারিয়ে ফেলেন তিনি। ম্যাচটা গোলশূন্য ড্র হলেও ওই থ্রো-তেই তিনি ভেঙেছেন রেকর্ড।
লোরেস্তানের সারাবায়োসে জন্ম নেওয়া বেইরানভান্দের মেষ চরানোই ছিল দৈনন্দিন জীবন। ফুটবল খেলতে বাধা দিয়েছিলেন তাঁর বাবা। কৌশলে এক আত্মীয়ের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার করে পালালেন বাড়ি থেকে। সোজা তেহরানের পথে, মনে বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন। গ্যারেজে গাড়ি মোছা, পিৎজা বিক্রি করা, পেটের দায়ে ক্লাবের পরিচ্ছন্নতাকর্মীর দায়িত্ব নিতেও পিছপা হননি আলিরেজা। ঘুমিয়েছেন নামাজ পড়ার কক্ষে। তারপর একদিন ডাক আসল নাফত-ই-তেহরান ক্লাব থেকে। সেখানেই কাজে লাগালেন নিজের সেরা বিদ্যা।
ইরানের একটি স্থানীয় প্রচলিত খেলা ‘দাল পারান’। ইটের টুকরো যতটা দূরে সম্ভব ছুড়ে মারার প্রতিযোগিতা। শৈশবের সেই ‘দাল পারান’ খেলার বিদ্যাটা গোলরক্ষক হিসেবে কাজে লাগান তিনি। এক ম্যাচে ৬৫ মিটার দূরে ‘অ্যাসিস্ট’ করে নজরও কাড়লেন বিদেশি সংবাদমাধ্যমের। সেই শুরু।
আলিরেজার পথচলা শুরু সেখানে থেকেই। এই বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। ১২ গজ দূর থেকে নেওয়া সেই শট থামিয়ে নিজের লড়াকু জীবনটা আবারও সকলকে মনে করিয়ে দেন আলিরেজা। এবার রেকর্ড গড়া থ্রো করে উঠে এলেন আলোচনায়। এর আগে নিজের ৬৫ গজ থ্রোয়ের রেকর্ড ভেঙেছেন তিনি ইরাকের বিপক্ষে।
বেইরানভান্দের সেই থ্রোয়ের ভিডিও লিংক: