নিউজিল্যান্ডের ঝড় মিরপুরে তুললেন থিসারা
নিউজিল্যান্ড সফরটা শ্রীলঙ্কার জন্য খুব একটা ভালো যায়নি। থিসারা পেরেরারও শুরুটা হয়েছিল খুব ভয়ংকর। তাঁর ওভারে ৩৪ রান তুলেছিলেন জিমি নিশাম। কিন্তু এর পর নিউজিল্যান্ডের বোলারদের ওপর দায় মিটিয়ে নিয়েছেন পেরেরা। একের পর এক ম্যাচে মাঠে নেমেছেন, আর ছক্কা হাঁকিয়েছেন বলে কয়ে। সে ফর্ম বিপিএলেও টেনে এনেছেন শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার। তাঁর ঝোড়ো ৭৪ রানেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ১৮৪ রানের পাহাড় গড়েছে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে।
রানের ৩০-ই এসেছে রবি ফ্রাইলিঙ্কের ১৯তম ওভারেই। প্রথম বলে মাত্র দুই রান এসেছিল। তখনো বোঝা যায়নি কী হতে যাচ্ছে। পরের দুই বলে ছক্কা, ওভারের শেষ দুই বলেও ছক্কা মেরেছেন পেরেরা। শুধু চতুর্থ বলটা চার হয়ে যাওয়ায় টানা পাঁচ ছক্কা দেখার অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত হলো বিপিএল। এর মাঝে ওভারের তৃতীয় বলেই ফিফটি ছুঁয়েছেন পেরেরা। ২০ বলে ৫০ ছোঁয়ার পথে মেরেছেন ৬ ছক্কা ও ১ চার। শেষ পর্যন্ত ২৬ বলে ৭৪ রানের ইনিংসে ছিল ৩ চার ও ৮ ছক্কা। কে বলবে আজ সকালেই ঢাকা এসেছেন পেরেরা। নিউজিল্যান্ড সফর শেষ করে আজই দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন পেরেরা।
৭৬ রানের এ ইনিংসের আগে কুমিল্লার ইনিংসটা বিপিএলের পরিচিত ছন্দে এগোচ্ছিল। অর্থাৎ টুক টুক গতিতে। ১৪তম ওভারেও কুমিল্লার রান মাত্র ৮৬, ৫ উইকেট হারিয়ে। সেটাও কাগজে-কলমে, এভিন লুইস চোট পেয়ে যে মাঠ ছেড়েছেন এর আগেই। মাত্র ৬ ওভারের বেশি সময় হাতে পেয়েছিলেন পেরেরা। তাতেই অমন তুলকালাম। ১৫তম ওভারে সানজামুল ইসলামকে তিন ছক্কা মেরেই পেরেরা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের ফর্ম ঢাকাতেও টেনে এনেছেন।
ছক্কা মারায় হয়তো এগিয়ে পেরেরা, তবে বড় ছক্কায় তাঁকে ছাড়িয়ে গেছেন সাইফউদ্দীন। পেরেরার আগে উইকেটে এসেও ১৯ বলে ২৬ রান করেছেন সাইফউদ্দীন। এর মাঝে একমাত্র ছক্কাটি ১৮তম ওভারে। আবু জায়েদের বলটি গ্যালারিতে ফেলেছেন সাইফ, ১০৩ মিটার দূরত্বে। সে ওভারেই পেরেরা আরেকটি বল ফেলেছেন ৯৪ মিটার দূরে। এমন ঝড়েই শেষ ১০ ওভারে ১১৬ রান এসেছে কুমিল্লার ইনিংসে। তামিম, এনামুল, ইমরুলদের আরেকটা ব্যর্থতাও তাই ঢাকা পড়ে গেল।
অথচ এ ম্যাচের গল্পটা খালেদ আহমেদের হতে পারত। তাঁর দ্বিতীয় ওভারে চারটি চার মেরেছিলেন এভিন লুইস ও ইমরুল কায়েস। পরের ওভারেই বদলা নিয়েছেন খালেদ। ইমরুলকে দুর্দান্ত এক বলে বোল্ড করেছেন, বোল্ড করেছেন লিয়াম ডসনকেও। এর মাঝেই চোট পেয়ে বিদায় নিয়েছেন লুইস। ওই খালেদের শেষ ওভারেই হিট উইকেট হয়েছেন শহীদ আফ্রিদি। পেরেরাকে বেশ বিপদেও ফেলেছিলেন বাকি চার বলে। কিন্তু পেরেরা ঝড় যে শুরু হলো এরপরই! শেষ ৬ ওভারে ৯৬ রান, এবারের বিপিএল অবশেষে দেখতে পেল টি-টোয়েন্টির আকাঙ্ক্ষিত শেষের ঝড়।